হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র ।
টেট-এসএসসি নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র পর এ বার মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগেও সিবিআই তদন্ত হতে পারে। বুধবার মাদ্রাসা নিয়োগ মামলা নিয়ে শুনানি চলাকালীন এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেননি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মাদ্রাসা কমিশনের বিরুদ্ধে উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এ ‘কারচুপি’ করার অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হন আব্দুল হামিদ নামে এক পরীক্ষার্থী। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই মামলাকারী পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র এবং কলম ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। ফরেন্সিকের রিপোর্টে উঠে এসেছে, দু’টি ভিন্ন কালির কলম ব্যবহার করা হয়েছিল উত্তর লেখার সময়ে। তবে একই ব্যক্তি এই কাজ করেছেন কি না তা নির্ণয় করা সম্ভব নয় বলেও রিপোর্টে লেখা হয়েছে। অন্য কোনও সংস্থা এটি করতে পারে বলেও ফরেন্সিকের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।
ফরেন্সিকের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই সিবিআই তদন্তের উল্লেখ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল)-র রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে, এই উত্তরপত্রে দু’ধরনের কালি ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে কে বা কারা এই কাজ করেছেন তা তদন্ত করতে এই মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে দিতেই পারি।’’ এ বিষয়ে বুধবার মাদ্রাসা কমিশনকে নয়া নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলাকারীর ইন্টারভিউ নিতে হবে। কমিশনকে পুরো ইন্টারভিউের ভিডিয়ো করে রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।
গত অগস্টে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হন আব্দুল হামিদ। মাদ্রাসা নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তরপত্র বাতিল হওয়ার পরেই তিনি আদালতে মামলা করেন। ইচ্ছা করে অন্য কলমের কালি ব্যবহার করে তাঁর উত্তরপত্র বাতিল করে দেওয়া হয় বলে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। হামিদের অভিযোগ ছিল, পরীক্ষা দেওয়ার পর অন্য কেউ তাঁর উত্তরপত্রে ‘কলম চালিয়েছে’। তিনি যে কালো কালির কলমে পরীক্ষা দিয়েছিলেন, সেটিও তিনি মামলা করার পর আদালতে জমা দিয়েছিলেন।
যদিও, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের দাবি, ভুল থাকার কারণে বৈধ ভাবেই ওই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর পরেই ওই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র যাচাইয়ের জন্য সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল)-র ডিরেক্টর এবং ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। সেই রিপোর্টই আদালতের হাতে এসেছে।