রাজ্য বিধানসভা। —ফাইল চিত্র।
পুজোর মুখে সোমবার বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল বিধানসভায়। জল্পনা ছিল, মন্ত্রী এবং বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সোমবার বিলটি পেশও হয়েছিল। কিন্তু আলোচনা হল না। শেষ পর্যন্ত শোকপ্রস্তাব পাঠ করেই মুলতুবি হয়ে গেল অধিবেশন। অন্য দিকে, বিধানসভায় বলতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি বিধায়কেরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিলের কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ দেখালেন তাঁরা। পাশাপাশি, রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরি এবং মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির দাবিও তোলেন বিরোধী বিধায়কেরা। শাসকদল তৃণমূলের দাবি, শোকপ্রস্তাবের কারণেই বিল নিয়ে আলোচনা করা যায়নি। অন্য দিকে, বিজেপির দাবি, রাজ্যপাল ওই বিল নিয়ে আলোচনায় অনুমোদন দেননি বলেই অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হল।
বিধানসভার গত অধিবেশনেই পূর্ণমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার লক্ষ্যেই বেতন এবং ভাতা সংক্রান্ত আইনে সংশোধনী আনতে চাইছে রাজ্য সরকার। বিধানসভায় বিল পেশ করে আলোচনা ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত রূপায়ণ করতে গেলে রাজ্যপাল আপত্তি করবেন, সেই আশঙ্কা শাসক শিবিরে ছিলই। সূত্রের খবর, রবিবার রাত পর্যন্ত ওই বিলে সম্মতি দেননি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যার ফলে অধিবেশনের কার্যসূচি নিয়ে আগে থেকেই অনিশ্চয়তা ছিল। শেষ পর্যন্ত বিল নিয়ে আলোচনায় রাজ্যপালের সম্মতি মিলেছে কি না, তা নিয়ে সোমবার অধিবেশনের সময় রাজ্য সরকার বা বিধানসভার স্পিকার কিছু জানাননি। পরিবর্তে শুধু শোকপ্রস্তাব পাঠ করেই অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশন ডাকা হয়েছে আগামী ৪ ডিসেম্বর। বিধানসভা সূত্রে খবর, ওই দিন দু’টি বিল নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তার মধ্যে মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিলটি রয়েছে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট করা হয়নি।
মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা গোড়া থেকেই করে আসছিল বিজেপি। শুভেন্দু জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর বেতনের বর্ধিত অংশ ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের মঞ্চকে আইনি লড়াইয়ের সহায়তার জন্য দিয়ে দেবেন। বিধানসভার এই অধিবেশন নিয়েও প্রথমে আগ্রহ ছিল না বিজেপির। কারণ, পুজো উদ্বোধনে সোমবারেই রাজ্যে আসার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তাঁর সঙ্গেই ব্যস্ত থাকতে হবে বিরোধী দলনেতাকে। পরে অবশ্য বিজেপি নিজেদের কৌশল বদল করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা এই বিশেষ অধিবেশনে ছিলেন না। পায়ে ব্যথা ও সংক্রমণের কারণে তিনি ঘরবন্দি। পুজো উদ্বোধনও সারছেন ভার্চুয়াল মাধ্যমে।