প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটে বেনজির বিপর্যয়ের পরে নেতা-কর্মীদের মনোবল তলানিতে। অতিমারি পরিস্থিতিতে আন্দোলন বা অন্যান্য প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মসূচিও স্তিমিত। কোণঠাসা অবস্থায় সংগঠন মেরামতেই আপাতত নজর দিতে চাইছে সিপিএম। আসন্ন সম্মেলন প্রক্রিয়ায় সংগঠনের কাজেই হাত দিতে চলেছে তারা।
সিপিএমের সম্মেলন-পর্ব এবং পার্টি কংগ্রেস সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল এই বছরেই। কিন্তু বাংলা, কেরল, তামিলনাড়ু-সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের জন্য পার্টি কংগ্রেস পিছিয়ে গিয়েছে এক বছর। ভোট মিটে যাওয়ার পরে আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে নিচু তলার সম্মেলন-পর্ব শুরু করতে চাইছে সিপিএম। সম্মেলন প্রক্রিয়ায় তৈরি হওয়া বিভিন্ন স্তরের কমিটিতে কী ভাবে তরুণ ও নতুন মুখকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, তার একটি খসড়া রূপরেখা তৈরি করেছে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। সাংগঠনিক স্তরে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর কথাও সেখানে বলা হচ্ছে। আগামী ১২ ও ১৩ অগস্ট দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে সম্মেলনের নির্ঘণ্ট এবং কমিটি গঠনের রূপরেখার ওই খসড়া নিয়ে আলোচনা হবে বলে সিপিএম সূত্রের খবর।
সাম্প্রতিক কালের মধ্যে বুধ ও বৃহস্পতিবারই প্রথম সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী আলিমুদ্দিনে আলোচনার টেবিলে বসেছিল। এর আগে যাবতীয় বৈঠকই হয়েছে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে। এ বারের বৈঠকে উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল, মতুয়া অধ্যুযিত এলাকা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ভোটের ফলাফল ধরে ধরে পর্যালোচনা করা হয়েছে। সম্মেলন-পর্বকে কাজে লাগিয়ে সংগঠনকে কী ভাবে ঢেলে সাজা যায়, তার পরিকল্পনাও আলোচনায় এসেছে। আগামী বছর জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সম্মেলন সেরে ফেলতে চায় আলিমুদ্দিন। আগামী সপ্তাহে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে ৬ থেকে ৮ অগস্ট। সেখানে পার্টি কংগ্রেসের দিনক্ষণ ঠিক করে সার্বিক ভাবে সম্মেলন-প্রক্রিয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা। তার পরেই রাজ্য কমিটিতে এ রাজ্যে দলের সম্মেলন সংক্রান্ত কর্মসূচি ঠিক করে প্রস্তুতি শুরু হবে।
তবে এর মধ্যেও সিপিএমরে চিন্তায় রাখছে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে আশঙ্কা। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে বা অক্টোবরে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন। তেমন হলে পরিস্থিতি বুঝে প্রতিনিধির সংখ্যা কমিয়ে সম্মেলন ছোট করতে হবে। প্রয়োজনে কিছুটা অংশ ভার্চুয়ালও করতে হতে পারে তখন।’’ বামেদের সম্মেলনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দলীয় কর্মসূচি আগে কখনও অনলাইন হয়নি।
কলকাতা-সহ রাজ্যের ১১৬টি পুরসভার ভোট বকেয়া রয়েছে। পুরসভার নির্বাচন চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করেছে বামফ্রন্ট। সেপ্টেম্বরের পরে বা পুজোর পরে রাজ্য পুরভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিলে তখন নির্বাচনের পাশাপাশিই সম্মেলন সামলাতে হবে সিপিএমকে!