অবস্থান বিক্ষোভে আরাবুল ও শওকত মোল্লা। —নিজস্ব চিত্র।
নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ভাঙড়ে ঢুকতে পারেননি বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। নিউ টাউনের কাছে হাতিশালায় দিনভর রাস্তায় অপেক্ষা করার পরে ফিরে যেতে হয়েছিল তাঁকে। এ বার সেই ভাঙড়ে ঢুকতে গিয়ে ‘বাধাপ্রাপ্ত’ হলেন ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা এবং শাসকদলের জেলা নেতা আরাবুল ইসলাম। নওশাদকে যে কারণ দেখিয়ে শুক্রবার ভাঙড়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, সেই ১৪৪ ধারার কারণ দেখিয়েই আটকানো হল দুই তৃণমূল নেতা এবং তাঁদের অনুগামীদের। এর পরেই পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন শওকত, আরাবুলরা। প্রতিবাদে রাস্তাতেও বসে পড়েন তাঁরা।
ভাঙড় ২ ব্লকের ভোগালি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কাঁঠালিয়া এলাকার এক তৃণমূল কর্মী মৃত্যু হয় শনিবার। শেখ মোসলেম নামে ওই তৃণমূল কর্মী ভোট-সন্ত্রাসে জখম হয়েছিলেন। শওকত অভিযোগ, দলীয় কর্মীর শেষকৃত্যে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু কাশীপুর থানার পুলিশ তাঁদের ভাঙড় ব্রিজের কাছে আটকে দেয়। ১৪৪ ধারার কারণ দেখিয়ে তাঁদের ভাঙড়ে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এর পরেই গাড়ি থেকে নেমে এসে রাস্তায় বসে পড়েন শওকত এবং আরাবুল। শওকত বলেন, ‘‘আমরা শেষকৃত্যে যেতে চাইছি। তাও পুলিশ যেতে দিচ্ছে না। তাই, আমরা এখানে বসে প্রতিবাদ করছি। পরিবারের লোকেরা বলছে, আমরা না গেলে শেষকৃত্য করবে না। কিন্তু আমরা ওদের বুঝিয়েসুঝিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।’’
একই ভাবে নওশাদকেও ভাঙড়ে যেতে আটকানো প্রসঙ্গে শওকত বলেন, ‘‘আইএসএফের লোকেরাই তো আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। পুলিশের উপর গুলি চালিয়েছে। তৃণমূল তো কিছু করেনি। আমরা তো ভাঙড়ে সভা করতে যাচ্ছি না। আমাদের এক জন মারা গিয়েছেন। তাঁর শেষকৃত্যে গেলে কী সমস্যা!’’
ঘটনাচক্রে, এই ঘটনার কিছু ক্ষণ আগেই নওশাদ অভিযোগ করেছেন, তাঁকে ভাঙড়ে ঢুকতে বাধা দেওয়া হলেও শনিবার শওকতেরা সেখানে গিয়ে দলের ২১ জুলাই কর্মসূচির প্রস্তুতি সভা করেছেন। আইএসএফ বিধায়ক বলেন, ‘‘আইন সকলের জন্য এক হতে হবে। বিরোধীদের আইনের যাতাকলে পিষে মারা হচ্ছে। আর শাসকদলের নেতারা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি আবার ভাঙড়ে যাব। দেখি কী করে আমায় আটকায়।’’ পাল্টা শওকতও বলেছেন, ‘‘আমরা ভাঙড়ে কোনও সভা করতে যায়নি। প্রকাশ্যে কিছু করিনি। স্রেফ বন্ধ ঘরে বৈঠক করেছি। দলের কর্মী মারা গিয়েছেন। সেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। আর ২১ জুলাইয়ের কী ভাবে প্রস্তুতি নেব, তা নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা হিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।’’