শুক্রবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।
আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন দলের নবনিযুক্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলে ফিরে সেই লক্ষ্যকেই যেন আরও স্পষ্ট করলেন মুকুল রায়। বললেন, ‘‘বাংলাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন আমাদের নেত্রী, ভারতের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ মুকুল সম্পর্কেও নিজের মূল্যায়ন স্পষ্ট করেছেন মমতা। সাংবাদিক বৈঠকে মমতা মুকুল সম্পর্কে বলেন, ‘‘ওল্ড ইজ অলওয়েজ গোল্ড।’’ একই সঙ্গে বলেন, ‘‘মুকুল আগে যে দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেন এখনও তাই করবেন।’’ উল্লেখ্য, একটা সময় তৃণমূলকে সর্বভারতীয় চেহারা দিতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন মুকুল।
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছর বিজেপি-তে ছিলেন মুকুল। তারও আগে বেশ কিছুদিন তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তাঁর। অবশেষে তৃণমূলে ফিরে মুকুল শুক্রবার বলেন, ‘‘বিজেপি থেকে বেরিয়ে এখানে এসে খুব ভাল লাগছে। পুরনোদের সঙ্গে দেখা হল।’’ তবে কেন তিনি বিজেপি ছাড়লেন, তা নিয়ে খুব বেশি কিছু বলেননি এই প্রবীণ নেতা। শুধু বলেন, ‘‘বিজেপি করতে পারলাম না।করব না। তাই পুরনো দলে ফিরে এলাম। বাকি বিস্তারিত কারণ লিখিত ভাবে জানাব।’’
তবে সেই লিখিত বিবৃতি কবে সামনে আনবেন সে সম্পর্কে কোনও ইঙ্গিত দেননি মুকুল। তৃণমূল ভবনে মুকুলকে সামনে পেয়েনাগাড়ে তাঁকে প্রশ্ন করা শুরু করে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। কিন্তু শুরুতেই ‘ঘরের ছেলে’ বলে উল্লেখ করা মুকুলকে অনেকটাই প্রশ্নবাণ থেকে আগলে রেখেছিলেন মমতা। অনেক প্রশ্নের উত্তর তিনি নিজেই দিতে শুরু করেন। নারদা এবংসারদা-কাণ্ডের তদন্ত সম্পর্কিত প্রশ্নে মমতাই উত্তর দিয়ে বলেন, ‘‘মুকুলকে অনেক চমকে-ধমকে এজেন্সির ভয় দেখিয়ে রেখেছিল।’’ আবার শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কিত প্রশ্ন উঠতেই মমতা বলে দেন, ‘‘সাংবাদিক বৈঠক শেষ!’’
মুকুল বিজেপি-তে যাওয়ার পরে অনেকই তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে গিয়েছিলেন। এ বার তাঁরাও কি ফিরবেন? মুকুল বলেন, ‘‘আরও কারা কারা আসবেন সেটা আগামী দিনেই দেখা যাবে। কিন্তু বিজেপি-তে আর বেশি লোক থাকবে না।’’ এ ক্ষেত্রেও মমতা জানিয়ে দেন, মুকুলের সঙ্গে যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁরা ফিরতে চাইলে দল ভাববে। তবে যাঁরা বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বেশি ঝাঁঝাল আক্রমণ করেছেন বা রুচিবিগর্হিত কথা বলেছেন, তাঁদের কোনও মতেই দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। বস্তুত, মমতাকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনালি গুহদের নিয়ে প্রশ্নও করা হয়েছিল। মমতা শুধু বলেন, ‘‘আমি অন্য কাউকে নিয়ে কিছু বলছি না।’’