নিজস্ব চিত্র।
রান্নার গ্যাসের পর এ বার মহার্ঘ আলুও। শনিবার আলুর দাম এক লাফে বেড়ে হল ৩০ টাকা প্রতি কেজি। কয়েক দিন ধরেই আলুর দাম বাড়ছিল। গত সপ্তাহেই খোলা বাজারে ২৪ টাকা কেজি দরে পৌঁছে গিয়েছিল আলুর দাম। শনিবার রান্নার গ্যাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ৩০ টাকা কিলো দরে আলু বিকোচ্ছে বর্ধমানের বিভিন্ন বাজারে। শুক্রবার মধ্যরাতে রান্নার গ্যাসের (১৪.২ কেজির) দাম বেড়ে গেল আরও ৫০ টাকা। ফলে কলকাতায় একটি সিলিন্ডার কিনতে এখন থেকে দিতে হবে ১,০২৬ টাকা।
স্টেশন বাজার থেকে, উদয়পল্লি, পুলিশ লাইন, বীরহাটা, নীলপুর, কালনাগেট বা তেঁতুলতলা বাজার— বর্ধমানের সর্বত্র জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। আর চন্দ্রমুখী বিকোচ্ছে ৪০ টাকা কিলোয়। নাভিশ্বাস গৃহস্থের।
এক দিকে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে, প্রায় নিয়ম করে বাড়ছে রান্নার গ্যাসের দামও। এ বার বেলাগাম আলুর বাজার। খামখেয়ালি আবহাওয়ার জন্য এ বছর রাজ্যে আলুর ফলন কম হয়েছে। আলু বীজ রোপনের সময় অকাল বৃষ্টিতে আলু চাষ মার খায়। বৃষ্টির জল জমিতে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় আলুবীজ ও গাছ নষ্ট হয়। ফের নতুন করে আলু জমি তৈরি করে আলু বসাতে হয় কৃষকদের। এর ফলে আলুর দাম বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীদের একটি অংশ।
আলু ব্যবসায়ী শ্যামাপদ ঘোষ বলেন, ‘‘আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরাও সমস্যায় পড়েছি। বিক্রি কমে যাচ্ছে। ক্রেতারা কম আলু কিনছেন। ফলে বাজার মার খাচ্ছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত কোনার বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে আলুর দাম ছিল ২০ থেকে ২২ টাকা। কিন্তু এখন তা বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা। আরও বাড়বে মনে হচ্ছে। সংসার চালাতে সমস্যায় পড়ে যাচ্ছি।’’
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির পূর্ব বর্ধমান জেলার সভাপতি উত্তম ঘোষ বলেন, ‘‘হিমঘর বন্ধ থাকায় আলুর দাম বেড়েছে। বর্ধমান শহর সংলগ্ন এলাকায় ১৩টি হিমঘরের মধ্যে মাত্র দু’টি হিমঘর থেকে আলু বেরোচ্ছে। শ্রমিক না থাকায় আলু বার করা যাচ্ছে না। ফলে বাজারে আলুর জোগান কম আছে।’’
গত বছর গোটা রাজ্যে হিমঘরে আলু মজুত হয়েছিল ১৪ কোটি ৪৮ লক্ষ প্যাকেট। এ বার হয়েছে সাড়ে ১২ কোটি প্যাকেট। তবে উত্তরপ্রদেশ থেকে বাংলায় আলু আসার ফলে হিমঘরগুলিতে প্রায় ৮০ শতাংশ মজুত হচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যেই আলুর দাম কমবে বলে আশা প্রকাশ করছেন আলু ব্যবসায়ীদের একটি অংশ।