ত্রিপুরায় ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসে বড়সড় আয়োজন। নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের পরে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরাতে বৃহৎ আকারে হতে চলেছে ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস সমাবেশের আয়োজন। আগামী বুধবার কালীঘাট থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সমাবেশে বক্তৃতা করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ হত ধর্মতলায়। সারা বাংলা থেকেকর্মী-সমর্থকরা আসতেন। কিন্তু ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণের কারণে সমাবেশ হচ্ছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। এবার তাই সেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে সমাবেশে তৃণমূল নেত্রীর বক্তৃতা দেখানো হবে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, গুজরাত, অসম, পঞ্জাব, কেরলের মতো রাজ্যে। তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ত্রিপুরাতেই সবচেয়ে বড় সমাবেশের আয়োজন করতে চলেছে বাংলার শাসকদল। যেহেতু এবারের সমাবেশ মঞ্চ ডিজিটাল, তাই ভারতের অন্য রাজ্যে নেত্রীর বক্তৃতা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না তারা। পশ্চিমবঙ্গের পর ত্রিপুরাতেই সবচেয়ে বেশি বাঙালিদের বাস। তাই স্বাভাবিকভাবেই বাঙালিদের মধ্যে মমতার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ত্রিপুরায় কর্মসূচির আয়োজনের লক্ষ্যে কলকাতা ডেকে পাঠানো হয়েছিল ওই রাজ্যের সভাপতি আশিসলাল সিংহকে। কীভাবে ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় মমতার বক্তৃতা শোনানোর আয়োজন করা যায়, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার উপদলনেতা সুখেন্দুশেখর রায়।বৈঠক সেরে আগরতলা ফিরে গিয়েছেন আশিসলাল। ত্রিপুরা তৃণমূল সূত্রে খবর, আগরতলা শহরের দু’টি জায়গায় মমতার বক্তৃতা শোনানো হবে। এছাড়াও গোমতী জেলার উদয়পুর ও উত্তরপ্রান্তের ধর্মনগরেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা শোনানো হবে। মোট চারটি জায়গায় লাগানো হতে পারে বড় জায়েন্ট স্ক্রিন। ওই সমস্ত জায়গায় করোনাবিধি মেনেই কর্মী-সমর্থকদের জমায়েত করতে বলা হয়েছে। ওইদিন ‘অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস’-এর ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবে মমতার বক্তৃতা সম্প্রচার করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভার ভোট। তার আগে ওই রাজ্যে শক্ত রাজনৈতিক জমি তৈরি করতে এখন থেকেই নামতে চায় তৃণমূল। সেই লক্ষ্যেই বেছে নেওয়া হয়েছে নেত্রীর সর্ববৃহৎ সমাবেশকে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, যে রাজ্যে তৃণমূল তাঁদের সংগঠন বাড়ানোর কাজ করবে, সেখানেই সরকার গড়ার জন্য ঝাঁপাবেন তাঁরা। তাই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পরিকল্পনা মতো বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার ঘুঁটি সাজানো শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে সভাপতি আশিসের ওপর নির্ভর করতে শুরু করেছে মমতার দল। প্রসঙ্গত, আশিসের পিতা শচীনলাল সিংহ একসময় ত্রিপুরায় কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।