প্রতীকী চিত্র নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার শারদোৎসবেও এবার আফগানি ছোঁয়া। এমনটা হতে চলেছে অশ্বিনীনগর বন্ধুমহলের এ বারের দুর্গোৎসবে। এই পুজোর থিম সং গাইবেন কয়েকজন আফগান শিল্পী। সঙ্গে পুজোর দিনগুলিতে তাদের পুজো মণ্ডপে দেখা যাবে আফগানি বেলি ডান্স।
পুজোর থিমেও রয়েছে অভিনবত্ব। গত বছর প্রয়াত হন মৃৎশিল্পী অরুণ পাল। ২০১৮ সালের শারদোৎসবে বাগুইআটির অশ্বিনীনগর বন্ধুমহলের প্রতিমা গড়েছিলেন অরুণই। তাই প্রয়াত শিল্পীকে সম্মান জানাতে তাঁকে উদ্দেশ্য করে থিম তৈরি হয়েছে। থিমের নাম দেওয়া হয় – অরুণ। শিল্পী সম্রাট ভট্টাচার্যই এই থিম নিয়ে কাজ শুরু করেন।
বাগুইআটির অশ্বিনীনগর বন্ধুমহলের পুজো সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে আফগান গায়করা। মঙ্গলবার নিজস্ব চিত্র
পুজোর কাজ চলাকালীন ২০ বছর পর আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালিবান। তারপরেই আফগানিস্তানের মানুষের দুর্দশার চিত্র ফুটে উঠতে থাকে সংবাদমাধ্যমে। এমন ঘটনার দিকে নজর যায় পুজো উদ্যোক্তাদের। আফগান গায়কদের দিয়ে দেবী দুর্গার পুজোর থিম সং গাওয়ানো যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। পুজো উদ্যোক্তারা এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই আলোচনা করেন শিল্পী সম্রাটের সঙ্গেও। দু’পক্ষের সম্মতিতেই স্থির হয় অশ্বিনীনগর বন্ধুমহলের এবারের পুজোর থিম সং গাইবেন আফগান গায়করাই।
কলকাতায় থাকা আফগান গায়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই সম্মতিও আদায় করে নেন উদ্যোক্তরা। চলতি সপ্তাহেই আফগান গায়করা পুজোর থিম সং রেকর্ড করবেন বলে জানানো হয়েছে।
পুজো উদ্যোক্তা স্বরূপ নাগ বলেন,‘‘আমাদের দেশ ভারতের ঐতিহ্য সবাইকে নিয়ে শান্তিতে থাকা। সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই পুজোর থিম সং আফগান শিল্পীকে দিয়ে গাওয়ানো হচ্ছে। গানে যেমন থাকবে আফগানি সুর, তেমনই থাকবে আফগানি ভাষার ব্যবহার। আসলে আফগানিস্তানের মানুষদের বার্তা দেওয়া হবে, যে আমরা তাঁদের সঙ্গেই আছি।’’ অশ্বিনীনগর বন্ধুমহলের পুজোয় আরও একটি আকর্ষণ থাকবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। ৪১তম বর্ষের শারদোৎসবে যেমন তাঁরা প্রয়াত শিল্পী অরুণকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন, তেমনই আফগান ভ্রাতৃত্বের বার্তা দিয়ে গাওয়ানো হবে থিম সং। সঙ্গে এই উৎসবের সময় করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা কেউ যাতে ভুলে না যান,সেই কারণেও দেবী দুর্গাকে পরানো হবে সোনার মাস্ক। এ ক্ষেত্রে একটি স্লোগানও ঠিক করেছেন পুজো কমিটির কর্তারা। স্লোগানটি হল – ‘সোনার মাস্ক পড়বে মা... ধ্বংস হবে করোনা।’