নতুন বিতর্কে অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডল।
অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, বিশেষ কোনও কথাই বলতে চাননি সুকন্যা। তার কিছু ক্ষণ পরেই বুধবার বিকেলে কলকাতা হাই কোর্টে জমা পড়ল সুকন্যার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ— তিনি টেট পরীক্ষা না দিয়েই প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, অভিযোগ আরও রয়েছে। সুকন্যা কোনও দিন স্কুলেই যাননি। বাড়িতে বসেই বেতন পান। এমন অভিযোগও উঠেছে যে, স্কুলের রেজিস্টার খাতা তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে নিয়ে আসা হত সুকন্যার স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য। অভিযোগ শুনে বৃহস্পতিবারই অনুব্রত-কন্যাকে আদালতে তলব করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত চলছে। বুধবার সেই মামলারই শুনানি ছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেই সময়ে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিয়ে সুকন্যার চাকরির বিষয়টি আদালতকে জানান। ওই আইনজীবীর দাবি, টেট পরীক্ষা না দিয়েই সুকন্যা প্রাথমিকে চাকরি পেয়েছেন। তাঁর নিয়োগ হয় বোলপুর ওয়েস্ট সার্কেলের কালিকাপুর প্রাইমারি স্কুলে। চাকরিতে যোগ দিলেও কোনও দিন স্কুলে বিশেষ যান না সুকন্যা, আদালতকে এমনটাই জানিয়েছেন ফিরদৌস। তিনি এ-ও বলেন যে, ‘‘স্কুলের রেজিস্টার খাতা অনুব্রতের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাঁর মেয়ের হাজিরা নিয়ে আসতেন এক জন।’’ শুধু সুকন্যাই নয়, অনুব্রতের অনেক ঘনিষ্ঠ এবং আত্মীয় চাকরি পেয়েছেন বলেও অভিযোগ জানান ফিরদৌস।
গরুপাচার মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত। তার মধ্যে তাঁর মেয়েকে নিয়ে ওঠা এমন অভিযোগ শুনে আদালতে চুপ করে থাকতে দেখা যায় রাজ্য সরকার ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবীদের। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কেও অবাক হতে দেখা যায়। অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ মোট ছ’জন টেট পরীক্ষা না দিয়েই চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ফিরদৌস। সব শুনে সুকন্যা-সহ ওই ছ’জনকে টেট পরীক্ষায় পাশ করার সার্টিফিকেট নিয়ে বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই ছ’জন যাতে আদালতে অবশ্যই আসেন তা নিশ্চিত করতে হবে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠীকে। হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে দ্রুত নগেন্দ্রর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।