প্রতীকী ছবি।
রাজ্য সরকার আবেদনের ফি সম্পূর্ণ মকুব করার ফলে গত বছরের তুলনায় কলেজগুলিতে এ বার দ্বিগুণ আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু ব্রাত্য থেকে গিয়েছে দর্শন, সংস্কৃত ও অর্থনীতির মতো বিষয়।
লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার বুধবার বললেন, ‘‘আবেদনের ক্ষেত্রে এ বার একেবারে ঝড় বয়ে গিয়েছে। গত বছর যা আবেদনপত্র জমা পড়েছিল তার প্রায় আড়াই গুণ এ বছর জমা পড়েছে। কিন্তু দর্শন, সংস্কৃত, হিন্দির জন্য আবেদন তেমন জমা পড়েনি।’’ একই ছবি বেথুন কলেজে। এই কলেজের অধ্যক্ষা কৃষ্ণা রায় জানালেন, এ বছর আবেদনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬,৫০০। সবথেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছে ভূতত্ত্ব, ইংরেজি, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, বাংলাতে। চোখে পড়ার মতো কম আবেদন জমা পড়েছে সংস্কৃত, হিন্দি, দর্শনে। শিক্ষা জগতের একাংশের মতে, পড়ুয়ারা সেই সব বিষয় পড়তে চান যাতে চাকরির সুযোগ থাকে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে দর্শন বা সংস্কৃত পড়ে জীবিকার জায়গা খুবই সংকুচিত হয়ে গিয়েছে। এমনকি অর্থনীতির পড়ার ক্ষেত্রেও একই কারণ। শীর্ষস্থানীয় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অর্থনীতি পড়ার জন্য পড়ুয়াদের মধ্যে ঝোঁক থাকলেও তুলনামূলক মাঝারি মাপের পড়ুয়ারা অর্থনীতি নিয়ে পড়তে চান না। কারণ এঁদের অনেকেই পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে বেছে নিতে চান। স্কুলের অর্থনীতির শিক্ষকের চাহিদা তেমন নেই।
ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজের অধ্যক্ষ সঞ্জিত দাস জানালেন, এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে তাঁর কলেজে গত বছর অর্থনীতিতে মাত্র একজন ভর্তি হয়েছিলেন। এ বছর সংখ্যাটা নয়। আসন রয়েছে ৩০টি। সংস্কৃতের ৩০টি আসনের মধ্যে পূরণ হয়েছে ছয়টি। দর্শনে ৫২টি আসনের মধ্যে ২৫টি পূর্ণ হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা কলেজের অধ্যক্ষা রুম্পা দাস জানালেন,গত কয়েক বছরের মতোই সব থেকে কম আবেদনপত্র জমা পড়েছে সংস্কৃত, দর্শন এবং অর্থনীতিতে।
নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দেব ষড়ঙ্গী জানালেন, আবেদনের ফি মকুব করে দেওয়ার পরে তাঁর কলেজে মোট ভর্তির আবেদন জমা পড়েছে গতবারের তুলনায় দেড় গুণ বেশি। আসনের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি আবেদন জমা পড়েছে বাণিজ্য বিভাগ, ইংরেজি, সাংবাদিকতা এবং কম্পিউটার সায়েন্সে। সবথেকে কম আবেদনপত্র জমা পড়েছে দর্শন এবং সংস্কৃত বিভাগে।