বিমান বসু ও অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।
বিধানসভা ভোটে একসঙ্গে লড়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দু’পক্ষই। তার পর থেকে আর রাজ্যে যৌথ কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না তাদের। উপনির্বাচনেও সমঝোতা মসৃণ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ কাটাতে এবং ভবিষ্যতের কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে দেখা করতে চান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। পুজোর পরে শুভেচ্ছা বিনিময়ের অবসরেই এমন দৌত্য হতে পারে বলে কংগ্রেস সূত্রের ইঙ্গিত।
চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে বিমানবাবুর সঙ্গে বারদুয়েক ফোনে কথা হয়েছিল অধীরবাবুর। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁর। কিন্তু সে সবের পরেও শান্তিপুর কেন্দ্র নিয়ে জট কাটেনি। সেখানে কংগ্রেস ও সিপিএম, দু’দলেরই প্রার্থী রয়েছে। কিছু দিন আগে শমসেরগঞ্জেও দু’পক্ষের প্রার্থী ছিল। সেই সময়ে ভবানীপুরে প্রার্থী দেওয়া নিয়েও এক প্রস্ত ‘বিভ্রান্তি’ হয়েছিল জোট শিবিরে। এ সবের প্রেক্ষিতেই বিমানবাবুর সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চান অধীরবাবু। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর বক্তব্য, প্রবীণ বাম নেতা বিমানবাবুকে তিনি শ্রদ্ধা করেন। কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়তো দু’পক্ষের মধ্যে তৈরি হয়েছে। ভবানীপুরে কংগ্রেস প্রার্থী না দেওয়ায় সিপিএম হয়তো অসন্তুষ্ট হয়নি। যদিও দলের হাই কম্যান্ডের নির্দেশেই ভবানীপুরে কংগ্রেসকে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। বিমানবাবুর মুখোমুখি হয়ে এ সব কথাই ব্যাখ্যা করতে চান অধীরবাবু। তাঁর মতে, শমসেরগঞ্জে সিপিএমের সমর্থন থাকলে হয়তো ওই আসন কংগ্রেস জেতার জায়গায় থাকত।
অধীরবাবু অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘বামেদের সঙ্গে জোট ভেঙে দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা জোট ভাঙতে চাই না বলেই খড়দহ, গোসাবা ও দিনহাটায় প্রার্থী দিইনি। শান্তিপুরে গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস লড়েছিল, সেই হিসেবে আসনটা আমরা চেয়েছিলাম। ওখানে সিপিএম প্রার্থী দিয়ে দেওয়ায় আমাদেরও বাধ্য হয়ে দিতে হয়েছে।’’
পাশাপাশিই কংগ্রেস সম্পর্কে তৃণমূলের সাম্প্রতিক বিষোদগার প্রসঙ্গে অধীরবাবু শুক্রবার বলেছেন, ‘‘বাংলা তোমার, দিল্লি আমার— দিদি ও মোদীর এই সমঝোতা চলছে। বাংলায় দিদির দল লাভবান হচ্ছে। আর বাকি দেশে তাঁর দল যা করছে, তাতে মোদীর লাভ হচ্ছে!’’ যার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘যে (অধীর) নিজেই মোদীর কোলে উঠে ঘুরে বেড়ায়, তার এ সব কথার কোনও গুরুত্ব নেই!’’ বিধান ভবনে এ দিন অধীরবাবুর হাত ধরে উত্তর ২৪ পরগনার কয়েকশো বিজেপি কর্মী দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের কিছু স্বাস্থ্যকর্মীর সংগঠনও কংগ্রেসে নাম লিখিয়েছে।