শেখ সুফিয়ান। ফাইল চিত্র।
নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসায় একটি খুনের মামলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ওই মামলার চার্জশিটেপূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতার নাম দেয়নি বলে তাঁর আইনজীবীর দাবি। এই ঘটনাকে ‘নৈতিক জয়’ হিসেবে দাবি করেছেন সুফিয়ান।
বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরের দিনই নন্দীগ্রামের চিল্লোগ্রামে দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা দেবব্রত মাইতি। পরে কলকাতার হাসাপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। বিজেপি নেতারা দেবব্রতকে তাঁদের দলের কর্মী দাবি করে তৃণমূলকে দুষেছিলেন। পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট পরবর্তী হিংসা-পর্বে খুন ও ধর্ষণের মামলাগুলির তদন্তের ভার নেয় সিবিআই। দেবব্রত খুনের ঘটনায় জেরার জন্য ডেকে পাঠানো হয় সুফিয়ান-সহ কয়েকজন তৃণমূল নেতা-কর্মীকে।
কিন্তু তদন্তের পর হলদিয়া মহকুমা আদালতে সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছে, তাতে সুফিয়ান-সহ নতুন করে কোনও তৃণমূল নেতা-কর্মীর নাম নেই বলে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী বিমল কুমার মাজি জানিয়েছেন। শুক্রবার বিমল বলেন, “দেবব্রত মাইতি খুনের তদন্তে নেমে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ যে তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল কেবলমাত্র তাঁদের নামই সিবিআই-এর চার্জশিটে রয়েছে। এর মধ্যে দু’জন শেখ ফতেনুর এবং শেখ মিজানুর জামিনে মুক্ত। মূল অভিযুক্ত শেখ ইমদাদুল এখনও জেল হেফাজতে।”
বিমল জানান, শুক্রবার হলদিয়া মহকুমা আদালতে ইমদাদুলের জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সিবিআই জামিনের বিরোধিতা করে। বিচারক সিবিআই-এর দাবি মেনে ইমদাদুলকে ফের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, “আজ সিবিআইয়ের দুই আধিকারিক আদালতে এসেছিলেন। তবে এই মামলার চার্জশিটে এখনও নতুন করে কারও নাম ঢোকানো হয়নি।”
দেবব্রত খুনের ঘটনায় বিজেপি বারে বারেই ‘তৃণমূলের একাধিক প্রথম সারির নেতা জড়িত’ বলে দাবি জানিয়েছে। কিন্তু সিবিআই চার্জশিটে কার্যত পুলিশের তদন্তকেই মান্যতা দেওয়ায় তৃণমূলের অন্দরে খুশির হাওয়া।
দেবব্রত খুনের ঘটনায় তাঁকে ফাঁসানোর জন্য রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন সুফিয়ান। তিনি বলেন, “দেবব্রত খুনের তদন্তে নেমে সিবিআই কেবলমাত্র ৩ জনের নামে চার্জশিট জমা দিয়েছে। অথচ দিন কয়েক আগেই নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে এসে শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই মামলায় ১২ জনকে জেলে পাঠানো হবে। এর পর সত্যিই যদি ১২ জনের নাম চার্জশিটে ঢোকানো হয়, তা হলে তা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে প্রমাণিত হবে।”