বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য কংগ্রেসের দুই শীর্ষনেতার এই ফুরফুরা অভিযান নিঃসন্দেহে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। ফাইল চিত্র।
হুগলির পিরজাদা ত্বহা সিদ্দিকির সঙ্গে মঙ্গলবার দুপুরে বৈঠকে বসছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ওই বৈঠকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কথা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকেও। বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য কংগ্রেসের দুই শীর্ষনেতার এই ফুরফুরা অভিযান নিঃসন্দেহে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই সন্ধ্যায় প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে বিধানসভা ভোটের জোট নিয়ে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের বৈঠক হওয়ার কথা। কংগ্রেস-বাম জোটের প্রাথমিক আলোচনা ওই বৈঠক থেকেই শুরু হবে। সেই বৈঠকেও অধীরের সঙ্গে মান্নানের থাকার কথা। থাকার কথা প্রদেশ কংগ্রেসের আরও কয়েকজন নেতার। অন্যদিকে, বামেদের পক্ষে সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের শীর্ষনেতারা ওই বৈঠকে থাকবেন। কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকের আগে বামফ্রন্টও বৈঠক ডেকেছে। সেই বৈঠকে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের খুঁটিনাটি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হওয়ার কথা। কংগ্রেস সূত্রের খবর, তার আগে ত্বহার সঙ্গে কথা বলে রাজ্যে মুসলিম ভোটের বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা পেতে চাইছেন অধীর।
সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যের মুসলিমদের একাংশ কংগ্রেসের থেকে দূরে সরে গিয়েছেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। পাশাপাশিই, আসাদউদ্দিন ওয়েইসির ‘মিম’ বিধানসভা ভোটে মালদহ-মুর্শিদাবাদ এবং উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রার্থী দিতে চলেছে বলে খবর। তা নিয়েও কংগ্রেসের মধ্যে খানিক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ঐতিহাসিক ভাবে সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও মুসলিমরা মূলত কংগ্রেসের সঙ্গেই থেকেছেন। কিন্তু পরপর কয়েকটি ভোটে দেখা গিয়েছে, কংগ্রেসের সেই ভোটে ভাগ বসিয়েছে তৃণমূল। পাশাপাশিই এবার ওয়েইসি আসরে নামার কথা বলায় মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক আরও বিভক্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে যা কংগ্রেসের পক্ষে বাড়তি চিন্তার কারণ।
আরও পড়ুন: সংখ্যালঘু-প্রশ্নে ভাবনায় কংগ্রেস, উদ্বেগ জোটেও
রাজ্যে বিজেপি-র উত্থানের পর মুসলিম ভোট আরও বেশি করে অ-বিজেপি শক্তির কাছে আসবে, সেটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু সেই ভোট যে পুরোপুরি কংগ্রেসের বাক্সে পড়বে, তারও কোনও নিশ্চয়তা কংগ্রেসের নেতারা দেখতে পাচ্ছেন না। সেই কারণেই মুসলিম ভোট নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে বাড়তি তৎপরতা শুরু হয়েছে। অধীরের ফুরফুরা সফর সেই কারণেই বলে প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: রাজ্যে তৎপরতা বাড়াচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
ত্বহার ভাইপো আব্বাস সিদ্দিকিকে নিয়েও চিন্তিত কংগ্রেসনেতারা। ইতিমধ্যেই তিনি কলকাতার লাগোয়া দুই জেলা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়ায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা শুরু করেছেন। সেই বিষয়েও কংগ্রেসের সংখ্যালঘু মুসলিম নেতারা খানিক চিন্তিত। আব্বাসের বিষয়েও ত্বহার সঙ্গে কংগ্রেসের দুই শীর্ষনেতার কথা হতে পারে বলে খবর। তবে ইতিহাস বলছে, সব দলের নেতারাই ত্বহার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেন। কংগ্রেসের দুই শীর্ষনেতার সঙ্গে বৈঠকের পর অদূর ভবিষ্যতে অন্যান্য দলের নেতারাও তাঁর সঙ্গে নিশ্চিত ভাবেই দেখা করবেন।