প্রতীকী ছবি।
শিয়ালদহ স্টেশনে নির্যাতিত শিশুর শারীরিক অবস্থা আগের থেকে একটু ভাল বলে রবিবার হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে। কিন্তু ওই ঘটনায় অভিযুক্ত এখনও অধরা। শিয়ালদহ স্টেশনের দায়িত্বে থাকা আরপিএফ জানিয়েছে, স্টেশনে ঠিক যেখান থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়, সেই জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তারা জিআরপি-কে দিয়েছে।
রেল পুলিশের সূত্রে জানানো হয়, তারা সিসি ক্যামেরার যে-ফুটেজ পেয়েছে, তাতে ওই শিশুকে এক যুবকের হাত ধরে যেতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু শিশুটির বাবা-মা ওই যুবককে চেনেন না। প্রশ্ন উঠছে, শিয়ালদহের মতো স্টেশনে রোজ হাজার হাজার লোক আসে। তাদের মধ্য থেকে অভিযুক্ত যুবককে শনাক্ত করা কঠিন। রেল পুলিশ কি আদৌ ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারবে? তার থেকেও যে-প্রশ্নটি বড় হয়ে উঠছে, সেটি হল, স্টেশনের ভিতর থেকে এক যুবক রাতে একটি শিশুকে রেলেরই একটি ‘সুরক্ষিত’ জায়গায় নিয়ে ঢুকল এবং যৌন নির্যাতন চালাল, কারও চোখে পড়ল না? শনিবার রেল পুলিশের এক কর্তা বলেছিলেন, বেলেঘাটা ডিজেল শেডের যেখানে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, সেটি ‘অতি সুরক্ষিত’ এলাকা। সেটি সর্বক্ষণ আরপিএফ বা রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের নজরদারিতে থাকার কথা।
প্রশ্ন উঠছে, ‘অতি সুরক্ষিত’ জায়গায় আরপিএফের নজরদারি এড়িয়ে শিশু-নির্যাতন ঘটল কী ভাবে? আরপিএফের এক শীর্ষ কর্তা রবিবার জানান, রেলের কোনও সম্পত্তি কেউ নষ্ট করছে কি না, আরপিএফ মূলত সেটাই দেখে। ভিতরে কে ঢুকছে, কেন ঢুকছে, তা দেখার দায়িত্ব তাদের নয়।
প্রশ্ন উঠছে, যেখানে দূরপাল্লা ট্রেনের ইঞ্জিন ও ডিজেল ভাণ্ডার থাকে, যে-কেউ অনায়াসে সেখানে ঢুকতে পারে কী ভাবে? ওই শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘ওখানে রেলকর্মীরা যাতায়াত করেন। পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে অভিযোগ করেন তাঁরা। তাই সেই পরিচয়পত্র দেখা হয় না।’’
রেল স্টেশনের ভিতর থেকে একটি শিশু নিখোঁজ হয়ে গেল, তার পরে রেলেরই একটি সুরক্ষিত জায়গায় তাকে পাওয়া গেল রক্তাক্ত অবস্থায়। এর পরেও আরপিএফ নিজেদের দায় এড়াতে পারে কী ভাবে?
শিয়ালদহ ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিয়োরিটি অফিসার এ ইব্রাহিম শেরিফকে এ দিনও এই বিষয়ে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। শিশু-নির্যাতনের প্রতিবাদে অল ইন্ডিয়া ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস অর্গনাইজেশনের তরফে এ দিন শিয়ালদহ স্টেশনের ভিতরে আরপিএফের বুথের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করা হয়। পরে তারা স্টেশনের আরপিএফ ইনচার্জ এস কে দ্বিবেদীকে স্মারকলিপি দিতে যায়। কিন্তু আরপিএফ সেটি নেয়নি বলে ওই সংগঠনের অভিযোগ। পরে রেল পুলিশ সেই স্মারকলিপি নিয়েছে।