—প্রতীকী চিত্র।
বাংলার বাড়ি প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের (জবকার্ড প্রাপক) ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্পে মজুরি দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় দফতরের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের পর্যালোচনা বৈঠকে এসে এ কথা জানালেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।
এত দিন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কোনও উপভোক্তার নামে জবকার্ড থাকলে এবং তিনি সেই বাড়ি নির্মাণে শ্রম দিলে সর্বাধিক ৯৫ দিনের অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি পেতেন। একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকে এই মজুরি দেওয়া হত।
কিন্তু একশো দিনের কাজ বন্ধ। সে প্রসঙ্গে টেনে মন্ত্রী অভিযোগ করেন, পর পর চারবার দেশে এই প্রকল্পে কাজের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ শীর্ষে থাকা স্বত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যে এই প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে। দীর্ঘদিন এই প্রকল্পে রাজ্যকে কোনও অর্থ দেয়নি কেন্দ্র। শ্রমিকদের মজুরির টাকাও দেয়নি। মুখ্যমন্ত্রীই শ্রমিকদের ওই বকেয়া মজুরি মিটিয়েছেন। শ্রমিকদের কাজ দিতে মুখ্যমন্ত্রী ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছেন।
পঞ্চায়েত মন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ১২ লক্ষ বাড়ি তৈরি করা হবে। সেই কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের কর্মদিবস কর্মশ্রী প্রকল্পে যুক্ত হবে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, উপভোক্তা বা কোনও শ্রমিক যদি তাঁর জবকার্ড থাকে, তিনি ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্পে মজুরি পাবেন। এতে নির্মাণ বাবদ খরচ উপভোক্তার অনেক কমে যাবে। আবার এই প্রকল্পে কাজের সুবাদে গ্রামীণ এলাকায় শ্রমিকদের হাতে অর্থও আসবে। কী ভাবে জবকার্ড প্রাপক শ্রমিকেরা এই প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে যুক্ত হবেন, তা নিশ্চিত করতে বিডিও ও পঞ্চায়েত প্রধানদের এ দিন বৈঠকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মীদের বলেন, ‘‘এই কাজ সঠিক ভাবে হচ্ছে কি না তা আপনাদের দেখতে হবে। উপভোক্তারা যাতে বাড়িটা তৈরি করতে পারেন, তা আপনাদের দেখতে হবে।’’
বৈঠকে হাজির পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব পি উলগানাথন বলেন, ‘‘উপভোক্তারা কাজ শুরু করেছেন কি না তা নিচুতলায় গিয়ে আপনাদের খতিয়ে দেখতে হবে। উপভোক্তাদের অধিকাংশ গরিব। এই প্রকল্পের অর্থ যাতে তাঁরা অন্য কোন ভাবে খরচ না করে ফেলেন তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি মনে রাখবেন এই প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থ কোন উপভোক্তা বাড়ি নির্মাণে খরচ না করলে সংশ্লিষ্ট উপভোক্তার নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে।’’
দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, উপভোক্তার তালিকা যে ভাবে অ্যাপের মাধ্যমে নিচুতলা থেকে যাচাই করা হয়েছিল। কাজ শুরু হওয়ার পরে নিচুতলা থেকে প্রতিটি বাড়ির কাজের অগ্রগতি সে ভাবেই যাচাই করা হবে। একটি অ্যাপের মাধ্যমে কাজের অগ্রগতি নজরে রাখা যাবে।’’
এই প্রকল্পের উপভোক্তারা অতীতে শৌচালয় নির্মাণের সুবিধা পেয়ে না থাকলে তাঁরা শৌচালয় গড়তেও পৃথক ভাবে ১২ হাজার টাকা পাবেন বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এ জন্য অবশ্য উপভোক্তাদের পৃথক ভাবে আবেদন করতে হবে।’’