এই জমিতে ডান্স বার করবে ভেবেছিলেন বাকিবুর। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া শহরের মূল কেন্দ্রে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত বাকিবুর রহমান ‘ডান্স বার’ করতে চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। তৎকালীন পুরপ্রধান তুষার সিংহ বাধা দেন। স্থানীয় মানুষও আপত্তি জানান। ফলে পরিকল্পনা বদলে প্রায় ৩০০ কাঠা জমির উপরে (বর্তমান বাজার দর কয়েক কোটি টাকা) গম, চাল, আটা রাখার গুদাম তৈরি করেন বাকিবুর। কারও কারও জমি ভয় দেখিয়ে কার্যত জলের দামে কিনে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেখানে স্থানীয় মানুষকে কাজ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কেউ কাজ পাননি বলেই অভিযোগ।
বাদুড়িয়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জেলেপাড়ায় বাকিবুরের এই সম্পত্তির হদিস মিলেছে। পুলিশ-প্রশাসনের একটি সুত্রে জানা গেল, ২০১৩-১৪ সালে এই জমির কিছুটা কেনেন বাকিবুর। কিছু অংশ দখলের অভিযোগ ওঠে। সব মিলিয়ে জমির পরিমাণ প্রায় ৩০০ কাঠা (১৫ বিঘা)।
পুরনো সে সব কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন অরবিন্দ দত্ত নামে এক ব্যক্তি। তাঁর জমি বাকিবুরের দলবল দখল করেছিল বলে অভিযোগ। একই বক্তব্য রিতা দত্ত নামে এক মহিলার। তাঁরা জানান, গোডাউনে কাজ দেবেন বলে মস্তান বাহিনী লাগিয়ে তাঁদের কার্যত উচ্ছেদ করা হয়েছিল। পরে পরিবারের কেউ কাজও পাননি।
রিতা বলেন, ‘‘আমাদের দু’কাঠা জমি এক রকম জোর করে কিনেছিলেন বাকিবুর। সেখানে আমাদের বসতবাড়ি ছিল। আমাদের বলা হয়েছিল, মিল বা গুদাম— যাই হোক, সেখানে আমাদের কাজ দেওয়া হবে। হুমকির মুখে সামান্য দামে জমি ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে কাজ পায়নি কেউ।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শ্মশানের উল্টো দিকে ‘ভুটানের বাগান’ বলে পরিচিত ওই জমির ভিতরে একটি পুকুর ছিল। সেটি মাটি ফেলে বেআইনি ভাবে ভরাট করা হয়। ওই জমিতে থাকা কয়েক জনকে কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও কিছুই হয়নি। জায়গাটা উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। তবে মাঝে মাঝে লরিতে করে চাল, গম, আটার বস্তা ঢুকতে দেখেছেন বলে জানালেন পাড়া-পড়শিরা।
বাদুড়িয়ার তৃণমূল নেতা গৌতম সিংহ বলেন, ‘‘শহরের কেন্দ্রস্থলে ডান্স বার করার কথা জেনে দাদা (প্রয়াত পুরপ্রধান তুষার সিংহ) প্রতিবাদ করেন। পরে ওই জমিতে গুদাম করে চাল, গম ও আটা রাখা হত বলে শুনেছি।’’ পুরপ্রধান দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জানতে পেরেছি, ওই জমি বাকিবুরের। তবে তাঁকে কোনও দিন এখানে দেখিনি।’’