জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
রেশন ‘দুর্নীতি’র টাকা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হয়েছিল বলে আগেই দাবি করেছিল ইডি। এ বার ইডি সূত্রে খবর যে, সেই টাকায় ৫৮টি ‘ফিক্সড ডিপোজ়িট’ বা স্থায়ী আমানত করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্ত্রী মণিদীপা মল্লিক এবং কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। ৫৮টি স্থায়ী আমানতের প্রতিটিতে গড়ে লাখ পাঁচেক টাকা রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে জানা গিয়েছে, ফিক্সড ডিপোজ়িট বাবদ মোট জমানো অর্থের পরিমাণ প্রায় ২ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা! কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় তাদের জমা দেওয়া প্রথম চার্জশিটেও বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
ফিক্সড ডিপোজ়িটের সন্ধান পাওয়ার পরেই তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, ভবিষ্যতে আর্থিক ভাবে সুরক্ষিত থাকতেই দুর্নীতির টাকা দীর্ঘমেয়াদের জন্য জমা রাখা হয়েছিল। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (যিনি রাজনৈতিক মহলে বালু নামে সমধিক পরিচিত)-র কথাতেই এই ফিক্সড ডিপোজ়িটগুলি করা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ইডি সূত্রে খবর, এই বিপুল অঙ্কের টাকা বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা। এর আগে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছিল যে, তিনটি ভুয়ো সংস্থার নামে দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করে সেগুলিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ওই সংস্থাগুলিতে বিভিন্ন সময়ে ডিরেক্টর পদে ছিলেন মন্ত্রীর স্ত্রী এবং কন্যা। ইডি যদিও চার্জশিটে ‘ফিক্সড ডিপোজ়িট’ নয়, এর পোশাকি নাম ‘টার্মড ডিপোজ়িট’ লব্জটি ব্যবহার করেছে। যদিও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে দু’টির মধ্যে বিশেষ ফারাক নেই।
দুর্নীতির তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই জ্যোতিপ্রিয়ের স্ত্রী এবং কন্যার বয়ান নথিবদ্ধ করেছে ইডি। চার্জশিটেও তাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ১৬২ পাতার চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসাবে তাঁদের নাম নেই। রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বাকিবুর এবং জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, চার্জশিটে জ্যোতিপ্রিয়, বাকিবুর ছাড়াও রয়েছে তাঁদের নামে থাকা ১০টি ভুয়ো সংস্থার নাম। এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর।