চাকরিহারাদের বিক্ষোভ। ছবি: সারমিন বেগম।
এসএসসি নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে বাম শিক্ষক সংগঠন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতিও (এবিটিএ)। তারা জানিয়েছে, যোগ্য শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াতে তারা শীর্ষ আদালতে মামলা করবে। সংগঠনের খরচে মামলাটি লড়বে বলেও জানিয়েছে এবিটিএ।
এবিটিএ-র বক্তব্য, দুর্নীতির বিরুদ্ধে হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তাতে অনেক যোগ্য শিক্ষকও চাকরি হারিয়েছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চান এবিটিএ কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন তাঁরা। জানিয়েছেন, সরকার যদি অযোগ্যদের আড়াল করতে না চেয়ে সঠিক সময়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করত, তবে এই পরিস্থিতি তৈরিই হত না।
এ প্রসঙ্গে এবিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার যদি এ বিষয়ে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ করত, তা হলে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না। সরকার অযোগ্যদের আড়াল করতে চেয়েছে। তাতে ভুক্তভোগী হচ্ছেন যোগ্য শিক্ষকেরাও। রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে নিজেদের ভুল ঢাকতে। কিন্তু আমরা যোগ্য শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। নিজেদের খরচে আমরা এই মামলা লড়ব।’’
উল্লেখ্য, এসএসসি নিয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের শিক্ষা দফতর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে পৃথক ভাবে শীর্ষ আদালতে মামলা করা হয়েছে। পাঁচ হাজার দুর্নীতিগ্রস্তকে শাস্তি দিতে কেন ২৬ হাজারের চাকরি বাতিল, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
এসএসসির নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র মামলায় শুনানির পর সোমবার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্ট। হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করে। তার ফলে চাকরি যায় ২৫,৭৫৩ জনের। যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে বলা হয়েছে ওই চাকরিপ্রাপকদের।
হাই কোর্ট জানায়, এসএসসি-দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগগুলি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। প্রয়োজনে তারা সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। অভিযোগ ছিল, অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার জন্য বাড়তি পদ তৈরি করা হয়েছিল এসএসসিতে। সেই পদ তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল খোদ মন্ত্রিসভা। সোমবারের রায়ে আদালত জানায়, সিবিআই চাইলে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সেই রায়ের খবর প্রকাশ্যে আসার পর এ বার শীর্ষ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল এবিটিএ-ও।