—ফাইল চিত্র।
কথা দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে ১০০ দিনের কাজের পারিশ্রমিক! বৃহস্পতিবার সেই টাকা হাতে পেলেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার মন্তেশ্বরের কয়েক জন শ্রমিক। তৃণমূল সূত্রে খবর, শ্রমিকদের হাতে যাঁরা বকেয়া পারিশ্রমিক তুলে দিয়েছেন, তাঁরা নিজেদের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের ‘প্রতিনিধি’ বলেই পরিচয় দিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে এবং ‘বকেয়া’ মেটানোর দাবিতে অভিষেকের ডাকে সাড়া দিয়ে ১০০ দিনের কাজের যে সব শ্রমিকেরা দিল্লিতে আন্দোলন করতে গিয়েছিলেন, তাঁদের পাওনা টাকা মেটানো শুরু হয়েছে। দিল্লি থেকেই তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি দু’মাসের মধ্যে বকেয়া না মেটায়, তবে শ্রমিকদের টাকা ব্যক্তিগত ভাবে দেবেন। সেই মতোই মন্তেশ্বরের বিভিন্ন এলাকায় থাকা ২৬ জন গরিব শ্রমিকের হাতে তাঁদের বকেয়া টাকা তুলে দেন ‘অভিষেকের প্রতিনিধি’ হিসাবে পরিচয় দেওয়া পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান ও সভাপতিরা। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্য তফসিলি উপজাতি সেলের রাজ্য সভাপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘বিজেপি চায় বাংলার সর্বনাশ করতে। কিন্তু আমাদের সরকার তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, পারিশ্রমিকের পাশাপাশি অভিষেকের লেখা একটি চিঠিও তুলে দেওয়া হয়েছে শ্রমিকদের হাতে। তাতে অভিষেক লিখেছেন, ‘‘প্রতিশ্রুতি মতো আর্থিক সাহায্য পাঠালাম। সপরিবার ভাল থাকুন। লড়াইয়ে থাকুন। মা-মাটি-মানুষের আন্দোলনে থাকুন। বকেয়া আদায়ের এই অধিকারের লড়াই চলতে থাকবে। জনবিরোধী, বাংলাবিরোধী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই লড়াই আমরা জিতবই।’’
১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বকেয়া টাকার দাবিতে গত ২-৩ অক্টোবর দিল্লিতে আন্দোলন করেছিলেন অভিষেক। তাঁর সঙ্গে দলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও রাজধানীতে গিয়েছিলেন বহু ‘বঞ্চিত’ শ্রমিক। অভিযোগ, কাজ করেও তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য মজুরি পাননি। শুধু ১০০ দিনের কাজ নয়। আবাস যোজনা, গ্রামসড়ক যোজনার টাকাও কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে বলে দাবি তৃণমূলের। সেই সময়েই আন্দোলনে যোগ দেওয়া শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর কথা বলেছিলেন অভিষেক। কিন্তু অভিষেক কী ভাবে এই টাকা পাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই অবশ্য সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। মমতা জানিয়েছেন, তাঁর দলের সাংসদেরা একত্রে এই টাকার ব্যবস্থা করেছেন। সকলে সম্মিলিত ভাবেই বকেয়া টাকা মেটানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার দলের সাংসদেরা প্রত্যেকে এক লক্ষ টাকা করে দিয়েছেন। নিজেদের বেতন থেকে তাঁরা ওই টাকা দিয়েছেন। দিল্লিতে যে তিন হাজার মানুষ অভিষেকের সঙ্গে গিয়েছিলেন, তাঁদের বকেয়া সেই টাকা দিয়ে মেটানো হচ্ছে।’’ লোকসভায় তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা ২২। রাজ্যসভায় ১৩ জন সাংসদ রয়েছেন তৃণমূলের। অর্থাৎ, মোট ৩৫ জন সাংসদ তাঁদের বেতন থেকে এক লক্ষ টাকা করে দিয়েছেন। এ ভাবে ৩৫ লক্ষ টাকা ওঠার কথা। মমতার কথা অনুযায়ী, তা থেকেই শ্রমিকদের বকেয়া মেটানো হচ্ছে।