অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সেই প্রসঙ্গে পুলিশকে কৃতিত্ব দিয়েও তাদের আরও কঠোর হওয়ার বার্তা দিলেন তৃণমূলের সেনাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার নিজের সংসদীয় কেন্দ্রে প্রশাসনিক সভা ছিল অভিষেকের। তার পর তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ অভিযুক্তকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে। তবে আমি বলব, সুরক্ষার প্রশ্নে আরও কঠোর হতে হবে।’’
যে অপরাধ আরজি করের চিকিৎসক পড়ুয়ার সঙ্গে ঘটেছে, তাকে ‘নারকীয়’ বলে উল্লেখ করেছেন অভিষেক। পাশাপাশি, এই ধরনের ঘটনায় পারিপার্শ্বিক প্রমাণ থাকলে কী করা উচিত, সে বিষয়েও নিজের মত ব্যক্ত করেছেন তিনি। অভিষেকের কথায়, ‘‘এই কাজ যারা করে, তাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই। কিন্তু আমাদের দেশের আইন, বিচারব্যবস্থা এমন, আমাদের হাত-পা বাঁধা।’’ অভিষেক মনে করেন, ‘‘এই ধরনের অপরাধ করলে, অপরাধীকে সাত দিনের মধ্যে বিচার শেষ করে হয় এনকাউন্টার করা উচিত, না হয় ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত।’’
আরজি করের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজেপি-সহ বিরোধীরা ময়দানে নেমেছে। এই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপির উচিত তাদের নেতৃত্বকে বলা, সংসদে যাতে অধ্যাদেশ আনা হয়। এই ধরনের ঘটনায় সাত দিনে বিচার শেষ করতে হবে, এই অধ্যাদেশ আনুক। ছ’মাস পরে তা বিল আকারে আসুক। তা আনলে তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম— সবার উচিত সেই বিলকে সমর্থন করা।’’
বিচারের নামে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বিলম্বের বিরোধিতা করেছেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, পারিপার্শ্বিক প্রমাণ থাকলে দ্রুত বিচার করা উচিত। না হলে অপরাধীকে জেলে খাওয়াতে-পরাতে যে খরচ হবে তা দিয়ে অনেক গরিব মানুষের কাজ করা যাবে। এই প্রসঙ্গেই আজমল কাসভের উদাহরণ টানেন অভিষেক। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের বক্তব্য, ‘‘ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে গুলি করে মানুষ মারছে, তার পরেও কেন বিচারে বিলম্ব?’’
ইতিমধ্যেই আরজি করের ঘটনায় রাজ্য সরকারের কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি মমতা এ-ও বলেছেন, ‘‘যদি পড়ুয়ারা মনে করেন আমাদের (রাজ্য সরকারের) উপর আস্থা নেই, অন্য এজেন্সি তদন্ত করবে, তা হলেও আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’’ যদিও এ বিষয়ে অভিষেক ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সিবিআই তদন্ত করে কি মেয়েটি ফিরে আসবে? কেউ বলতে পারবেন, এই ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি হবে না?’’ এই প্রসঙ্গেই কঠোর আইন করার দাবি তুলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুখে শুধু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা বললে হবে না। দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হবে।’’