অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
হাই কোর্টের নির্দেশের পর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর কাছে নথি এবং তথ্য জমা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার রাত ১২টার আগেই ওই সব জমা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
মঙ্গলবারই কলকাতা হাই কোর্ট জানায়, অভিষেক যদি আদালতের নির্দেশ না মানেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারবে ইডি। নিয়োগ মামলায় অভিষেকের কাছে ইডি যে নথি চেয়েছিল, সেই সব নথি মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর জমা দেওয়ার কথা ছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিষেকের তরফ থেকে কোনও নথি জমা দেওয়া হয়নি ইডির দফতরে। এর পরেই হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের একক বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতের নির্দেশ না মানলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারবে ইডি।’’
অভিষেককে ইডির কাছে নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। গত ৫ অক্টোবর বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয়কুমারের বেঞ্চ ওই নির্দেশ দেয়। বিচারপতি সেন বলেছিলেন, ‘‘অভিষেককে ওই দিনই সব নথি জমা দিতে হবে। তার পর তাঁকে একটি ঘণ্টাও অতিরিক্ত সময় দেবে না আদালত। একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ তাদের নির্দেশে বলেছিল, ‘‘অভিষেকের জমা দেওয়া নথিতে ইডি যদি সন্তুষ্ট না হয়, তবে তাঁকে হাজিরা দিতে বলতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।’’
এর পরই মঙ্গলবার হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে অভিষেকের সংস্থা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংক্রান্ত মামলাটি ওঠে। বিচারপতি সিংহের কাছে তদন্তের রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই এবং ইডি। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, রাত ১২টার মধ্যে নথি জমা করতে হবে অভিষেককে। তার মধ্যে নথি জমা দিতে না পারলে একক বেঞ্চের নির্দেশ অনুসারে অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারবে ইডি। হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে রাত ১২টার আগেই নথি জমা করেছেন অভিষেক।
আগে যা হয়েছিল
নিয়োগ মামলায় হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক। ইডির হাজিরা এড়াতে চেয়ে এবং সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের ব্যাখ্যা চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। অভিষেকের যুক্তি ছিল, বেঞ্চ তাঁকে মামলায় না জুড়েই এমন সব নির্দেশ দিচ্ছে, যা সরাসরি তাঁর স্বার্থকে প্রভাবিত করবে।তাঁর সেই আবেদনের ভিত্তিতে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছিল হাই কোর্ট। গত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই বিচারপতি সেন অভিষেকের আইনজীবী বলেন, ‘‘মাথায় রাখবেন, এটা কোনও সরাসরি তদন্ত নয়। কোর্টের নজিরদারিতে তদন্ত চলছে। তাই সিঙ্গল বেঞ্চ এটা করতে পারে। তদন্তের প্রয়োজনে তদন্তকারী সংস্থার কাছে জবাব চাইতেই পারে সিঙ্গল বেঞ্চ। এমনকি, কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চললে আদালত যদি তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্টে সন্তুষ্ট না হয়, তবে নতুন নির্দেশও দিতে পারেন বিচারপতি।’’ এই যুক্তিতেই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়নি ডিভিশন বেঞ্চ। তার পরেই অভিষেককে ১০ অক্টোবর নথি পেশ করার নির্দেশ দেয় আদালত। বলে। নথিতে সন্তুষ্ট না হলে তারা আবার অভিষেককে ডেকে পাঠাতে পারবে। কিন্তু তলব করার আগে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা সময় দিতে হবে অভিষেককে।