অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
ভোটে নিষ্ক্রিয়তা, ‘অন্তর্ঘাত’ এবং বিরোধিতার খোঁজে দলের ভিতরে ফের ‘খানাতল্লাশি’ শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের জেলা সভাপতি, সাংসদ এবং বিধায়কদের কাছে জরুরি ভিত্তিতে এই সংক্রান্ত লিখিত রিপোর্ট চাইলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই রিপোর্টে ভোটের সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকার কথাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২৯টিতে জয় পেলেও জনসমর্থন নিয়ে নিশ্চিন্ত নয় তৃণমূল। তাই দলের ‘ফাঁকফোকর’ চিহ্নিত করেছেন দলীয় নেতৃত্ব। সেই সূত্রে গত ২১ জুলাই সাংগঠনিক স্তরে ‘ব্যবস্থা’ গ্রহণের ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক। ইতিমধ্যেই দলের পরামর্শদাতা সংস্থা ও নিজস্ব পরিকাঠামোর মাধ্যমে একটি রিপোর্ট নিয়ে তিনি মূল্যায়নের কাজ করেছেন। এই নিয়ে পদক্ষেপের আগে দলের মত ও বিশ্লেষণ জানতে চান তিনি। এই তথ্যে দলের ‘গোষ্ঠী-রাজনীতি’ও চিহ্নিত করতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘দলীয় স্তরে মূল্যায়নে সরাসরি নির্বাচনের কাজে যুক্ত থাকা সকলের সম্পর্কে নির্দিষ্ট ও স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে। কারণ, যাঁদের কাছ থেকেই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে, তাঁরা ভোটের দায়িত্বে ছিলেন।’’ অভিষেকের দফতর থেকে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, ‘অতি দ্রুত নির্বাচনে আপনার এলাকার সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক মূল্যায়ন লিখিত ভাবে পাঠিয়ে দিন।’ জেলাগুলিকে কয়েক দফায় ভেঙে পর পর এই রিপোর্ট নেওয়া হবে। তবে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসন সম্পর্কে দলের কাছ থেকে রিপোর্ট নেওয়ার উদ্যোগ ঘিরে। কারণ, তৃণমূল দলের নেতা-কর্মী বা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলেও প্রশাসনের আধিকারিক বা কর্মী সম্পর্কে কী করতে পারে, সেই প্রশ্ন থাকছে।
সংখ্যালঘু অঞ্চলে তৃণমূলের প্রতি একচ্ছত্র সমর্থনের বিষয়টি লোকসভা ভোটে ধাক্কা খেয়েছে। আবার তফসিলি জাতি ও জনজাতি ভোটের জায়গার কিছুটা ‘উদ্ধার’ করলেও দলের জন্য তা খুব নির্ভরযোগ্য নয়। এই অবস্থায় বিধানসভা ভোটের আগে সাংগঠনিক স্তরে ‘সংস্কার’ চাইছে তৃণমূল। এই সব ক্ষেত্রে জনসমর্থন বজায় রাখতে কী পদক্ষেপ প্রয়োজন, তা-ও দলকে জানাতে বলা হয়েছে ‘অনুসন্ধান’-পর্বে।