তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
যে বিজেপির নেতারা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছিলেন, তাঁরাই এখন মহিলাদের আরও বেশি টাকা দেওয়ার কথা বলছেন! পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের শেষ পর্বে এসে এই সুরে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অবিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র মতো প্রকল্প নেই, সেই প্রশ্ন তুলে প্রচারেও নামছে তৃণমূল।
কালনা-২ ব্লকের বৈদ্যপুরে বুধবার প্রচারে গিয়ে অভিযেক বলেছেন, ‘‘দু’মাস, পাঁচ মাস আগে যে বিজেপি নেতারা লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছিল, তারা এখন বলছে, বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলে আমরা লক্ষ্মীর ভান্ডার দেব। এরা নাকি ২০০০ টাকা করে লক্ষ্মীর ভান্ডার দেবে! যারা ৬ মাস আগে বাংলার মানুষকে লক্ষ্মীর ভান্ডার নেওয়ায় ভিখারি বলে অপবাদ দিয়েছিল, তাদের কাছে এখন লক্ষ্মীর ভান্ডার ভগবানের প্রসাদ হয়ে গিয়েছে!’’ পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র রাজ্যে যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’কোটি মহিলাকে মাসে পাঁচশো-হাজার টাকা করে পৌঁছে দিচ্ছেন বলে দাবি করে অভিষেক ফের বলেছেন, ‘‘কম-বেশি ১২টা রাজ্যে বিজেপি ও তার শরিক দল ক্ষমতায় আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি পরিবারের এক জনকে নয়, সব মহিলাকে লক্ষ্মীর ভান্ডার দিচ্ছেন। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, একটা রাজ্যে যদি বিজেপি লক্ষ্মীর ভান্ডার চালু করে, যত মহিলা আছে, প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে দেওয়া বাস্তবায়িত করে দেখাতে পারলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতি থেকে চিরতরে বিদায় নেবে!’’ তাঁর দাবি তৃণমূল সরকার দু’বছরে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ দিতে ৩৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। এর মধ্যে ৩৭ পয়সার অবদানও কেন্দ্রীয় সরকারের নেই!
বিজেপি ক্ষমতা পেলে ‘অন্নপূর্ণার ভান্ডার’ প্রকল্প করে দু’হাজার টাকা দেওয়া হবে, পঞ্চায়েতের ভোট-প্রচারে এমনই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন এখনও বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ দেওয়া হয় না, সেই প্রশ্ন তুলে পাল্টা প্রচার শুরু করছে তৃণমূল। দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলোক মুখোপাধ্যায় এ দিন জানিয়েছেন, প্রত্যেক ব্লক সভাপতিকে এই মর্মে প্রচারপত্র বিলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রচারের শেষ দিন আজ, বৃহস্পতিবারই। তৃণমূলের এক ব্লক সভাপতির বক্তব্য, “এত তাড়াতাড়ি খুব বেশি প্রচারপত্র ছাপিয়ে বিলি করা চ্যালেঞ্জের। তবে নির্দেশ মানতেই হবে।’’ তবে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ সংক্রান্ত প্রকল্প যে হেতু রাজ্য সরকারের বিষয়, তাই এই নিয়ে প্রচার পঞ্চায়েত ভোটের পরেও চলতে পারে।
মহিলাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিনও বালুরঘাটে বলেছেন, ‘‘আমরা ক্ষমতায় এসে দু’হাজার টাকা করে দেব গরিব মহিলাদের। সেই সঙ্গে রাজ্যে শিল্প গড়ে পাঁচ বছরের মধ্যে বাইরে যাওয়া ৪৫ লক্ষ পরিয়ায়ী শ্রমিকের কাজের ব্যবস্থা করব।’’