এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্টে প্রমাণ দেখিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
কলকাতা হাই কোর্ট মানতে না চাইলেও সন্দেশখালি নিয়ে তাঁর অভিযোগে অনড় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্দেশখালির অশান্ত পরিস্থিতির জন্য আবার হাই কোর্টের নির্দেশকেই দায়ী করলেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর এ বার নিজের বক্তব্যের প্রমাণও দেখালেন তিনি।
মঙ্গলবার সকালে এক্স হ্যান্ডলে হাই কোর্টের একটি নির্দেশনামা পোস্ট করেছেন অভিষেক। সেখানেই তিনি লিখেছেন, ‘‘গত ৭ ফেব্রুয়ারি (সন্দেশখালি নিয়ে পুলিশের তদন্তে) স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। ঠিক তার পরের দিন অর্থাৎ ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই হিংসা এবং বিক্ষোভ শুরু হয় (সন্দেশখালিতে)।’’
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ-সহ তাঁর অনুগামীদের গ্রেফতারির দাবিতে পথে নেমেছিলেন সন্দেশখালির মানুষ। যে বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়তে বাড়তে দিনে দিনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। শাহজাহানকে গ্রেফতারির ব্যাপারে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তোলেন বিরোধীরা। এক্স হ্যান্ডলে অভিষেক লিখেছেন, আসলে পুলিশের উপর জারি হওয়া ওই স্থগিতাদেশেরই সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছে বিজেপি এবং বাংলা বিরোধী কিছু গণমাধ্যম।
গত বুধবারই অভিষেক আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, শাহজাহানের গ্রেফতারির ক্ষেত্রে অন্তরায় আদালত। কোর্টই পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে। অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। ইডি তাঁকে ধরতে পারেনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গিয়ে রাজ্য পুলিশের ওই এফআইআরের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেয়েছে। ফলে পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে আদালতই।’’ কিন্তু সোমবার অভিষেকের আনা অভিযোগ অস্বীকার করে কলকাতা হাই কোর্ট। বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করা হলে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সন্দেশখালির শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করায় কোনও বাধা ছিল না পুলিশের। পুলিশকে এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। আমরা পুলিশকে বলিনি, শাহজাহানকে গ্রেফতার করা যাবে না।’’
আদালত ওই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই মঙ্গলবার সকালে এক্স হ্যান্ডলে আদালতের নির্দেশনামাটি পোস্ট করেন অভিষেক। ৭ ফেব্রুয়ারির ওই নির্দেশনামায় স্বাক্ষর রয়েছে স্বয়ং কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির। তাতে দেখা যাচ্ছে, নির্দেশনামাটি গত ১৭ জানুয়ারি হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের একটি নির্দেশের বিরুদ্ধে ইডি দু’টি আবেদন সংক্রান্ত। ছবিতে চিহ্নিত অংশটিতে দেখা যাচ্ছে, আদালতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পুলিশকে ইডির আবেদন সংক্রান্ত মামলায় কোনও রকম পদক্ষেপ এবং তদন্ত না করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
অর্থাৎ, পুলিশি তদন্তে স্থগিতাদেশের যে অভিযোগ অভিষেক এনেছিলেন তা ভুল নয় বলেই বুঝিয়েছেন অভিষেক। তবে একই সঙ্গে ওই পোস্টে অভিষেক এ কথাও লেখেন যে, সোমবার হাই কোর্ট এ ব্যাপারে বিভ্রান্তি দূর করার পর তিনি আশা করছেন সন্দেশখালির মানুষ দ্রুত সুবিচার পাবেন।