অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
আরজি করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৯ অগস্ট। তার পর থেকে ১৫ দিনে দেশে যে সমস্ত ধর্ষণের ঘটনা সংবাদমাধ্যমের নজরে এসেছে, তার একটি ‘কোলাজ’ তৈরি করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লিখলেন, গোটা দেশ ধর্ষণের বিচার চেয়ে আন্দোলন করছে। অথচ, এই কোলাজটিই বলে দিচ্ছে এই মুহূর্তে ভারতের পরিস্থিতি আসলে কী রকম? দেশে এই মুহূর্তে ধর্ষণবিরোধী আইনের প্রয়োজন। কারণ, পরিসংখ্যান বলছে, দেশে প্রতি ১০০টি ধর্ষণের ঘটনায় ৭৪ জন শাস্তিই পান না।
মঙ্গলবার আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ছাত্রসমাজ। সেই দিন সকালেই সমাজমাধ্যমে ওই পোস্ট করেছেন অভিষেক। খবরের শিরোনাম দিয়ে যে কোলাজ অভিষেক পোস্ট করেছেন, তার শিরোনাম— ‘‘আরজি করের ঘটনার পর থেকে ১৫ দিনে মহিলাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং শারীরিক অত্যাচারের একাধিক ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এসেছে।’’ সেই সমস্ত শিরোনামের কোথাও লেখা যোধপুরে মন্দিরের বাইরে শুয়ে থাকা তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের কথা। কোথাও লেখা অসমে ১৪ বছরের কিশোরীকে টিউশন পড়ে ফেরার পথে ধর্ষণ। আবার ওড়িশায় দুই রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আইসিইউয়ের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে! অভিষেক লিখেছেন, ‘‘ভারতের এই পরিস্থিতির জবাব একটাই। কঠোর ধর্ষণবিরোধী আইন প্রয়োজন, যা ৫০ দিনের মধ্যে ধর্ষণে অভিযুক্তের শুনানি এবং দোষী সাব্যস্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কারণ, দেশে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করার হার মাত্র ২৬ শতাংশ।’’ অর্থাৎ, পুলিশের কাছে রিপোর্ট দায়ের হওয়া প্রতি ১০০টি ধর্ষণের ঘটনায় ২৬ জন দোষী সাব্যস্ত হন। বাকি ৭৪ জন ধর্ষণের শাস্তিই পান না।
আরজি কর নিয়ে অভিষেকের তৃতীয় পোস্ট এটি। আরজি করের ঘটনা নিয়ে অভিষেক প্রথম মুখ খুলেছিলেন ১৪ অগস্ট রাতে। রাত দখলের আন্দোলনের সময় আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনার পরে। তার পরে গত ২২ অগস্ট দেশে ধর্ষণের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে দ্বিতীয় পোস্ট করেছিলেন অভিষেক। সেই পোস্টে ধর্ষণবিরোধী আইন আনার দাবি করেছিলেন তিনি। এ-ও বলেছিলেন, ওই আইনের জন্য রাজ্য সরকারকেই চাপ দিয়ে হবে কেন্দ্রের উপর। অভিষেকের ওই পোস্টের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধর্ষণবিরোধী আইন চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছিল রাজ্য সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ওই চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পোস্টের পাঁচ দিন পরে মঙ্গলবার সকালে আবার সমাজমাধ্যমে আরজি কর এবং দেশে ধর্ষণবিরোধী আইন আনার ব্যাপারে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ। মঙ্গলবার তিনি লেখেন, ‘‘আমাদের যদি এই অপরাধের শিকারদের সুবিচার পাইয়ে দিতেই হয়, তবে অবিলম্বে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমাদের একটি সময় নির্দিষ্ট ধর্ষণবিরোধী আইনের দাবি জানাতে হবে। তা ছাড়া বাকি সব কিছুই সারবত্তাহীন প্রচেষ্টা হবে। এবং আদতে কোনও কাজ হবে না।’’