অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
অঙ্কের গেরোয় ঝুলে থাকা শুধু ২১ জন পরীক্ষার্থী নন। প্রাথমিকের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। যার অর্থ, ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের প্রাথমিক শিক্ষকের যোগ্যতা নির্ধারক পরীক্ষা (টেট)-য় বসা লক্ষাধিক টেট নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
অঙ্কের হিসাবের জেরে এত দিন ঝুলে ছিল গত দু’টি টেটের অনেক পরীক্ষার্থীর ভাগ্য! অবশেষে তাঁদের পক্ষে বৃহস্পতিবার রায় দিয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রথমে ২১ জন মামলাকারীকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বিচারপতি। পরে রাতে প্রকাশিত নির্দেশনামায় সংখ্যাটা ২১ থেকে বেড়ে লক্ষ ছাড়ায়।
জাতীয় শিক্ষক শিক্ষণ পর্ষদ (এনসিটিই)-এর নিয়ম অনুযায়ী টেট পরীক্ষায় সংরক্ষিত প্রার্থীদের ৫৫ শতাংশ এবং সাধারণ প্রার্থীদের ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। মামলাকারীরা সবাই সংরক্ষিত প্রার্থী এবং প্রত্যেকেই ১৫০ নম্বরের মধ্যে ৮২ নম্বর পেয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের যুক্তি, ১৫০-এর মধ্যে ৮২ নম্বর আসলে ৫৪.৬৭ শতাংশ। অর্থাৎ, নিয়ম অনুযায়ী ৫৫ শতাংশ হচ্ছে না। চাকরিপ্রার্থীরা যদি ১ নম্বর বেশি পেতেন, তবে শতাংশের বিচারে তা হত ৫৫.৩৪। অতএব, এ ক্ষেত্রে ৫৫ শতাংশের নিয়ম প্রযোজ্য হত। তাই পর্ষদ সংরক্ষিতদের জন্য ৮২-র পরিবর্তে ৮৩ নম্বর ধার্য করে।
অন্য দিকে, মামলাকারীদের আইনজীবীর দাবি, বিষয়টি নিয়ে জটিলতার কারণে এনসিটিই শতাংশের পাশাপাশি নম্বরও নির্দিষ্ট করে দেয়। এনসিটিই জানায়, ৮২ নম্বর হলেই যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। সেই মোতাবেক ৫৪.৬৭ শতাংশকে ৫৫ শতাংশ হিসাবেই গণ্য করা উচিত। তা ছাড়া দু’টি টেটেই কয়েকটি প্রশ্ন ভুল ছিল। তা নিয়ে মামলাও হয়েছে। ফলে সেখান থেকে কিছু নম্বর পেলেই মামলাকারীরা যোগ্য হবেন। এই অবস্থায় পরীক্ষার্থীরা উত্তীর্ণ না কি অনুত্তীর্ণ, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। সেই মামলায় এ বার দু’টি টেটের লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীকে ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার সুযোগ করে দিল উচ্চ আদালত। পর্ষদও যাতে ওই আবেদন গ্রহণ করে, তারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।