woman

সেলাইয়ের কোর্স করে হাউস কিপিংয়ের চাকরি

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের যুগদিয়ার বাসিন্দা আনসারি। সংসার সামলে ব্লক প্রশাসনের অধীনে উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পে টেলারিংয়ে ছ’মাসের কোর্স সম্প্রতি শেষ হয়েছে তাঁর।

Advertisement

সমীরণ দাস 

মগরাহাট শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩৮
Share:

নেতাজি ইন্ডোরের সভায় আনসারি। নিজস্ব চিত্র

সেলাই-ফোঁড়াইয়ে আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। রাজ্য সরকারের উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পে এলাকায় ‘টেলারিং’ কোর্স করানো হচ্ছে জেনে ভর্তিও হয়ে যান। ভেবেছিলেন, কোর্স শেষে সেলাইয়ের কাজ করে আয় করবেন। কিন্তু ছ’মাসের সেই কোর্স শেষে আনসারি খাতুনের মিলেছে শপিং মলে হাউস কিপিংয়ের চাকরি!

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের যুগদিয়ার বাসিন্দা আনসারি। সংসার সামলে ব্লক প্রশাসনের অধীনে উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পে টেলারিংয়ে ছ’মাসের কোর্স সম্প্রতি শেষ হয়েছে তাঁর। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কারিগরি শিক্ষার পড়ুয়াদের নিয়ে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সফল পড়ুয়াদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। আনসারিও ডাক পান।

আনসারি জানান, সে দিন একটি চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয় তাঁকে। সেখানে একটি কোম্পানির লেটারহেডে লেখা ছিল, তিনি নিরাপত্তা রক্ষীর কাজের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। বুধবার তাঁকে ওই কোম্পানির তরফে জানানো হয়, কলকাতার একটি শপিং মলে সাফাই এবং অন্যান্য পরিষেবা দেওয়ার কাজ পেয়েছেন। দৈনিক আট ঘণ্টা কাজে মাসে ৮ হাজার টাকা বেতন। রাতেও কাজ করতে হতে পারে।

Advertisement

বছর তিনেকের মেয়ে রয়েছে আনসারির। ভেবেছিলেন, কাছাকাছি কোথাও সেলাইয়ের কাজ মিলবে। সংসার, সন্তান সামলে চাকরি করতে পারবেন। কিন্তু রোজ কলকাতায় গিয়ে শপিং মলে কাজ করা কার্যত অসম্ভব বলে জানালেন তিনি।

আনসারির কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে শুক্রবার আমাদের আবেদনপত্র নেওয়া হয়েছিল। আমি টেলারিং কোর্সের সব কাগজপত্র দিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁরা জানান, নিরাপত্তা রক্ষীর (সিকিউরিটি গার্ড) কাজ মিলতে পারে। সে ভাবেই আবেদন করতে বলেন। কাছাকাছি হলে তা-ও করতাম। কিন্তু এখন বলছে, রোজ কলকাতায় গিয়ে হাউস কিপিংয়ের কাজ করতে হবে। রাতেও যেতে হতে পারে। বাড়িতে ছোট বাচ্চা। সে সব সামলে অত দূরে গিয়ে নিয়মিত কাজ করা সম্ভব নয়।”

মগরাহাট ২ ব্লকের উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শাবব আলম বলেন, “উৎকর্ষ বাংলার কোর্স করার পরে প্রতিটি পড়ুয়ার কাছে পেশাগত ভাবে তিনটি বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে। উনি হয় তো টেলারিংয়ের পাশাপাশি নিরাপত্তা রক্ষী বা সাফাই ও অন্যান্য পরিষেবা প্রদানের বিকল্প কাজ বেছেছিলেন। সে কারণে সেখানেই চাকরি মিলেছে।”

এই চাকরি না নিলে কি বিকল্প কিছু মিলবে?

শাবব বলেন, “সে ব্যাপারে আপাতত কোনও নির্দেশিকা আসেনি।”

স্থানীয় সিপিএম নেতা চন্দন সাহার কটাক্ষ, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চপ-ঘুগনি তৈরির কথা বলছেন। সেখানে এটাই তো স্বাভাবিক।’’ মগরাহাট পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নমিতা সাহার কথায়, ‘‘মেয়েটি কাজ পেয়েছে বলে শুনেছি। কিছু সমস্যা হলে আমি কথা বলে দেখব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement