মোটরবাইক ছেড়ে সাইকেলে খানাকুল ১-এর পঞ্চায়েত প্রধান বাদশা শাহ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
দলে ‘বিত্তবান’ চান না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এক বছরে ফের ভোলবদল খানাকুলের একটি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের! আর গলায় সোনার চেন নেই। হাতের সোনার ব্রেসলেট উধাও। দু’হাতের আংটিই বা কই! সোমবার আচমকাই মোটরবাইকের বদলে তাঁর ‘বাহন’ সাইকেল। তাতেই এখন ঘুরছেন হুগলির খানাকুল ১ পঞ্চায়েতের প্রধান বাদশা শাহ।
অবশ্য, সে সাইকেলের দামও কম নয়। স্থানীয় লোকজন বলছেন, যে সাইকেলে অনন্তনগরের বাদশা চাপছেন, তার দু’টি গিয়ার এবং এমন সাইকেলের বাজারদর ১৪-১৫ হাজার টাকা হতে পারে। তবে বাদশার কথায়, “পুরনো সাইকেলটা ভেঙে যাওয়ায় চলতি বছরের গোড়ায় জমানো ১০ হাজার টাকা দিয়ে এটা কিনেছি।”
গ্রামবাসীর একাংশের কথায়, আগে কিন্তু ঠাটবাট ছিল না বাদশার। এক বছর আগে পঞ্চায়েত প্রধানের চালচলন বদলে যায়। আঙুলে আংটি, গলায় সোনার চেন। সঙ্গে মোটরবাইক। সোমবার হঠাৎই সাইকেল আর হাতের স্মার্ট ওয়াচটুকু রেখে বাকি সব ‘ত্যাগ’ করেছেন। কেন? “রবিবার ধর্মতলার সমাবেশে দলনেত্রী বিত্ত না বাড়িয়ে বিবেকে জোর দিতে বলেছেন। গয়না, বাইক ছেড়েছি তাই। সাইকেলেই ঘুরে জনসংযোগ বাড়াচ্ছি”, বলছেন বাদশা।
বিরোধীদের অবশ্য দাবি, সহজে ওই সব গয়না হয়নি। প্রধানের পদ পেয়েই ‘ধরাকে সরা জ্ঞান করেছেন’! খানাকুল ১ ব্লকের বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় মাজির অভিযোগ, “পঞ্চায়েতে আসা সরকারি প্রকল্পের টাকার একাংশ ঠিকাদারদের মাধ্যমে প্রধানদের পকেটেই ঢোকে। এক বছরে তাতেই এত রমরমা।” বাদশার পাল্টা দাবি, “দর্জির কাজ করি। গরুর ব্যবসা, হোটেল আছে। সেই আয়েই কিছু অলঙ্কার গড়িয়েছি। বাইকটা পুরনো। কারও কথায় মাথা ঘামানোর সময় নেই। প্রয়োজনে দল তদন্ত করুক।”
তবে গ্রামবাসীর অনেকে বলছেন, প্রধান হওয়ার কয়েক মাস আগেই দর্জির কাজ ছেড়েছেন বাদশা। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রামে গান্ধী আশ্রমের জায়গা ‘দখল’ করে ভাতের হোটেল তৈরির অভিযোগ আছে। রাজনৈতিক গোলমালে ২০২১-এ গ্রেফতারও হন। সব মিলিয়ে, বাদশার টাকার উৎস নিয়ে গ্রামে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে।