নয়ডার ‘টুইন টাওয়ার’ গুঁড়িয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেছে দেশ। ফাইল চিত্র।
জোরালো বিস্ফোরণে নয়ডার ‘টুইন টাওয়ার’ গুঁড়িয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেছে দেশ। সেই পরিকল্পিত বিস্ফোরণের জেরে বহুতল ভেঙে পড়ায় ভূগর্ভে কী প্রভাব পড়েছে, তা নিয়েও জল্পনা কম নেই। বস্তুত, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বিস্ফোরণের সময় জোড়া বহুতলের ছয় কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে ওত পেতে ছিল ভূবিজ্ঞানীদের ১৫টি যন্ত্রচক্ষু। আদতে সেই ১৫টি চোখ ছিল সেন্সর!
নয়ডার বিস্ফোরণের অভিঘাত বুঝতে হায়দরাবাদের ন্যাশনাল জিয়োফিজ়িক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের যে-দলটি ঘটনাস্থলে গিয়েছিল, তার মাথায় ছিলেন দুই বাঙালি ভূবিজ্ঞানী প্রকাশ কুমার ও বিশ্বজিৎ মণ্ডল। তাঁরা জানান, ভারতে এই প্রথম এমন কোনও সমীক্ষা করা হল। এই ধরনের জোরালো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিশালাকার নির্মাণ গুঁড়িয়ে দিলে ভূগর্ভে কী প্রভাব পড়তে পারে, সেটা বোঝা দরকার। নইলে ভবিষ্যতে জনবহুল এলাকায় এমন কাজ করা কতটা সুরক্ষিত, তা বোঝা যাবে না।
ওই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তাঁরা যে-সব তথ্য পেয়েছেন, তা বিশ্লেষণের কাজ চলছে। সেই কাজ শেষ হলে সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জমা পড়বে। তবে এই গবেষণা কী কাজে লাগবে, তার একটি রূপরেখা দিয়েছেন বিশ্বজিৎ। তিনি জানান, যে-কোনও বিস্ফোরণের পরে শব্দতরঙ্গ ভূগর্ভে যায় এবং বিভিন্ন স্তর থেকে তা প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসে। তা বিশ্লেষণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভূগর্ভের চরিত্র যেমন বোঝা যায়, একই ভাবেবিস্ফোরণের জেরে ভূগর্ভে কোনও বদল ঘটেছে কি না, তা-ও বোঝা যেতে পারে। এ ছাড়াও, ওই এলাকায় ভূগর্ভে কোনও ‘ফল্ট’ বা চ্যুতি হয়েছে কি না, সেটাও বোঝা সম্ভব। এই তথ্যের মাধ্যমে ওই এলাকার ভূকম্পন বিপর্যয়ের আঁচ যেমন করা যেতে পারে, তেমনই ভবিষ্যতে কোনও গগনচুম্বী অট্টালিকা তৈরির সময় কেমন ব্যবস্থা প্রয়োজন, তা-ও বোঝা যেতে পারে।