—প্রতীকী ছবি।
দশ বছর আগে ইন্টারভিউয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র ‘ভুলে’ ৬ নম্বর পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন এক মহিলা চাকরিপ্রার্থী। তার ফলে চাকরিও জোটেনি। তা নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে অবশেষে তাঁর সামনে চাকরির সুযোগ খুলে গিয়েছে। শোভারানি মণ্ডল নামে ওই চাকরিপ্রার্থীর মামলায় সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, মামলাকারী ওই ৬ নম্বর পাবেন ও তার ফলে তিনি চাকরি পাওয়ার যোগ্য বলে প্রমাণিত হলে এসএসসি ওই চাকরিপ্রার্থীকেনিয়োগ করবে।
শোভারানির আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, তাঁদের মক্কেল ২০১১ সালে এসএসসির মাধ্যমে স্কুল শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসেছিলেন। তাঁর স্নাতক ডিগ্রির পাশাপাশি ডিইএলএড ডিগ্রি ছিল। জাতীয় শিক্ষক প্রশিক্ষণ সংসদের (এনসিটিই) নিয়ম অনুযায়ী, তিনি ৬ নম্বর পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু এসএসসি ওই নম্বর তাঁকে দেয়নি। এ নিয়েই হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল।
হাই কোর্টে শোভারানির আইনজীবীদের যুক্তি ছিল, এনসিটিই-র নিয়মে থাকলে এসএসসি সেই নম্বর দিতে বাধ্য। যদিও সেই যুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন এসএসসি-র আইনজীবীরা। প্রথমে মামলাটির শুনানি হয়েছিল বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের এজলাসে। কিন্তু সেখানে মামলায় হেরে যান শোভারানি। তার পরে সেই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন। বিচারপতি সেন এবং বিচারপতি কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য শোভারানির আইনজীবীদের যুক্তি মেনে নিয়েছে এবং জানিয়েছে, এনসিটিই-র নিয়মের বাইরে এসএসসি যেতে পারবে না। তাই ওই নম্বরদিতে হবে।
আইনজীবী মহলের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যে বর্তমানে স্কুলে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত চলছে। দীর্ঘদিন ধরে চাকরির দাবিতে রাজপথে বসে আছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তবে নিয়োগের জট কাটার কোনও ইঙ্গিত এখনও দেখা যাচ্ছে না। নিয়োগে কোনও দুর্নীতি বা গরমিল হয়েছে তা মানতে নারাজ রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে শোভারানির মামলা বিশেষ ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এ ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ না থাকলেও কেন এসএসসি এনসিটিই-র নিয়মের বাইরে গিয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।