বাঙালির বারো মাসে তের পার্বণ। বর্ষবরণের পরেই যে উৎসব বাঙালির দরজায় কড়া নাড়ে তা হল পৌষ-সংক্রান্তি। বাঙালির ঘরের আদুরে নাম পৌষ-পার্বণ — পিঠে-পুলির উৎসব। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ভাবে পালন হয় এই উৎসব। যার নেপথ্যে লুকিয়ে রয়েছে বহু অজানা পৌরাণিক কাহিনী। মকর সংক্রান্তির সেই সমস্ত গল্প নিয়েই শ্রী সিমেন্টের উদ্যোগে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল দ্য বেঙ্গল। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক পবিত্র সরকার, স্বনামধন্য থিয়েটার শিল্পী মণীশ মিত্র, ফোক গায়ক শ্রীমতি সীমা ঘোষ এবং শ্রী অভিজিৎ আচার্য।
আলোচনা শুরু করেন প্রবীণ নাট্য ব্যক্তিত্ব শ্রী সৌমিত্র মিত্র। অন্যদিকে নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে মকর সংক্রান্তির প্রথা, আচারের গুরুত্ব বর্ণনা করেন পবিত্র সরকার। তিনি জানান, শুধু বাংলা বা ভারতেই নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যে সমস্ত দেশের প্রধান খাদ্য চাল, সেই সমস্ত অঞ্চলেও এই আচার অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রত্যেক কৃষকের জীবনেই ধান তোলার দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণেই এক অপার আনন্দে মেতে ওঠেন তাঁরা। পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এই দিন চাল দিয়ে তৈরি বিভিন্ন সুস্বাদু পদ তৈরি করে দিনটি উদযাপন করেন। বাংলার প্রতি ঘরে তৈরি হয় পিঠে-পুলি।
দেশের বিভিন্ন অংশের এই উদযাপনের কথা তুলে ধরেন শ্রী মণীশ মিত্রও। অন্য দিকে সমধুর লোকগীতি পরিবেশন করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন শ্রীমতি সীা ঘোষ ও অভিজিৎ আচার্য। গ্রাম বাংলায় বসবাসকারী মানুষের জীবনের আনন্দ, উদযাপনের ছবি আঁকে এই গানগুলি।
এ ছাড়া আলোচনা পর্বে গল্পের ছলে বিভিন্ন পৌরাণিক ঘটনাও উঠে আসে। যে সময় সূর্য গ্রীষ্মের সূচনা করেন শীতের অন্ধকার দিনকে শেষ করে, তখনই হয় মকর সংক্রান্তি। এই দিনেই ইচ্ছামৃত্যুর বর পাওয়া পিতামহ ভীষ্ম নিজের মৃত্যু মেনে নিয়েছিলেন। এই সমস্ত গল্প আলোচনা করা হয় আলোচনা সভায়। এই অনুষ্ঠানটির ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার ছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
দ্য বেঙ্গলের অনারারি সেক্রেটারি জেনারেল শ্রী সন্দীপ ভুতোরিয়া এই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে জানান, মকর সংক্রান্তির পুণ্য তিথিতে দ্য বেঙ্গল আয়োজিত ও শ্রী সিমেন্টের সহযোগে "পৌষ পার্বণ...কথায় গানে মকর সংক্রান্তি'' অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত মনোগ্রাহী। এই অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে এই দিনটি কেমন করে পালন করা হয় শুধু সেটাই জানা গেল তাই নয়, এই বিশেষ দিনটির সঙ্গে জড়িত পৌরাণিক কাহিনীগুলির কথা জানতে পেরে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে পুনরায় পরিচিত হলাম। বাংলার লোকগান ও লোককথায় অনুষ্ঠানটি ছিল সমৃদ্ধ। শ্রদ্ধেয় প্যানেলিস্ট ও সমগ্র দর্শকের প্রতি আমার বিনিত প্রণাম রইল। এই দুঃসময়ে দ্য বেঙ্গলের এই অনলাইন নিবেদন আশা করছি সবার জীবনে খানিক খুশির ঝলক এনে দিয়েছে। আমাদের ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার আনন্দবাজার পত্রিকার কাছেও আমরা কৃতজ্ঞ।