কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও বড়সড় রকমের অনিয়মের অভিযোগ করলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগের মামলায় খোদ কলকাতা হাই কোর্টেও সেই অনিয়মের প্রসঙ্গ তুলে সওয়াল করেছেন ওই চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীরা। প্রসঙ্গত, উচ্চ প্রাথমিক মামলাটি বর্তমানে বিচারপতি সৌমেন সেনের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে আছে। আগামিকাল, সোমবার ফের ওই মামলার শুনানি হতে পারে।
মামলার সর্বশেষ শুনানিতে নাসরিন খাতুন-সহ একদল চাকরিপ্রার্থীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, কোর্টের নির্দেশে ইন্টারভিউ ও কাউন্সেলিং হলেও তাতে বড় অনিয়ম হয়েছে। বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, বেশি নম্বর পাওয়া প্রার্থীর বদলে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থী ডাক পেয়েছেন। অসঙ্গতি আছে শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য বরাদ্দ নম্বরে। নিয়ম ভেঙে শূন্যপদের অনুপাতে বেশি প্রার্থীকে ডাকা হয়েছে। উচ্চ প্রাথমিকের টেট-এর নম্বরেও গরমিল আছে বলে ফিরদৌস দাবি করেন।
স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) সূত্রের অবশ্য দাবি, তারা ইন্টারভিউ নেওয়ার পরে উত্তরপত্র ফের যাচাই করতে গিয়ে কিছু গরমিল পান। তার ভিত্তিতেই সংশ্লিষ্ট চাকরিপ্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এই যুক্তি এসএসসি-র কৌঁসুলিরা কোর্টেও জানিয়েছেন। তবে আইনজীবীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, এই যুক্তি মেনে নিলে গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে পারে। কারণ, চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেই ২০১১ এবং ২০১৫ সালে হওয়া দু’টি উচ্চ প্রাথমিক টেট-এ পাশ করেছেন। এ ক্ষেত্রে এসএসসি শুধু ২০১৫ সালের টেট-এর উত্তরপত্র যাচাই করে গরমিল পেয়েছে। সে ক্ষেত্রে বাতিল হওয়া কোনও পরীক্ষার্থী ২০১১ সালের টেট পাশ করে থাকলে তিনি ওই শংসাপত্র দিয়ে আবেদন করার সুযোগ দাবি করতে পারেন।
প্রসঙ্গত, সাত বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ কার্যত ঝুলে আছে। এ নিয়ে হাই কোর্টে মামলা চলছে। কোর্টের নির্দেশে এক বার প্যানেল বাতিল করে ফের নতুন করে প্যানেল তৈরি করতে হয়েছে। বিভিন্ন এজলাস ঘুরে মামলাটি আপাতত বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন। তবে নিয়োগের গতিপ্রকৃতি নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ তৈরি হয়েছে।