গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বাম-কংগ্রেস জোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই অধীর চৌধুরীকে ‘মুখ্যমন্ত্রী মুখ’ হিসেবে তুলে ধরার দাবি নিয়ে আসরে নামল কংগ্রেস। জোট ঘোষণার খানিকক্ষণ পরেই টুইট করেন পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডি থেকে বিধায়ক নেপাল মাহাতো। কংগ্রেস পরিষদীয় দলের ডেপুটি লিডার টুইটে লেখেন, ‘এই জোটের মুখ্যমন্ত্রী মুখ অধীররঞ্জন চৌধুরী মহাশয়!"
বৃহস্পতিবার দুপুরে জোটের কথা টুইট করে জানান কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা তথা পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তিনি লেখেন, ‘বামেদের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে বৃহস্পতিবার সায় দিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড’। আর অব্যাবহিত পরেই এ হেন টুইটে কংগ্রেসের একাংশ অবশ্য অস্বস্তিতে। রাজ্য কংগ্রেসের ওই অংশের বক্তব্য, জোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই এমন দাবি করা কার্যত জোটের ধারণার পরিপন্থী। কারণ, আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে দাবি করে জোটের আলোচনায় গেলে ভেস্তে যেতে পারে গোটা জোট প্রক্রিয়া। তাই এখনই মুখ্যমন্ত্রী পদ দাবি করা থেকে বিরত থাকুক কংগ্রেসের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী।
এই প্রসঙ্গে অনেকের মনে পড়েছে ২০১৯ সালের কথা। এ ভাবেই লোকসভা নির্বাচনের সময় রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন নিয়ে দড়ি টানাটানিতে ভেঙে গিয়েছিল জোট সম্পর্ক। এ নিয়ে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের মন্তব্য, "আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জোটের সিদ্ধান্ত যখন এআইসিসি নিয়েছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি সংক্রান্ত বিষয়টিও তাদের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হোক।"
আরও পড়ুন: ৮ তারিখই নন্দীগ্রামে প্রাক্তন নেত্রীকে ‘জবাব’, ঘোষণা শুভেন্দুর
আরও পড়ুন: আগামী বছর উচ্চমাধ্যমিক শুরু হচ্ছে ১৫ জুন থেকে
নেপাল মাহাতোর টুইটকে আমল দিতে রাজি নয় বামফ্রন্টের শরিকদলগুলি। এ প্রসঙ্গে বামফ্রন্টের শরিক সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "এমন কোনও নাম নিয়ে কখনও আলোচনা হয়নি। এরকম মুখ্যমন্ত্রী প্রোজেক্ট করে ভোটে লড়াই করার পক্ষেও আমরা নই। যা বলা হয়েছে, তা অফিসিয়াল নয়। টুইট করে উনি নিজের কথা বলেছেন, পার্টির নয়।" বালুরঘাটের প্রবীণ বিধায়ক তথা আরএসপির রাজ্য সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, "অনেকে অনেক দাবি করে থাকেন। কিন্তু সেইসব দাবি তো আর বাস্তবতার মুখ দেখে না। তাই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে যে কথা কংগ্রেস বিধায়ক বলেছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত মত হতেই পারে। এ বিষয়ে বামফ্রন্টের কোনও বৈঠকে বা কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় কোনও কথাই হয়নি।" এ প্রসঙ্গে আবার ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, "এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না। যা বলার বলবেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।"
প্রসঙ্গত, প্রদেশ কংগ্রেসের রাজনীতিতে বাঘমুন্ডির বিধায়ক অধীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাই মনে করা হচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির শিবির থেকেই টুইটটি করানো হয়েছে। কারণ বহরমপুরের পাঁচবারের সাংসদের অনুগামীরা প্রথম থেকেই বামফ্রন্টের ওপর চাপ তৈরি করতে চাইছে। যাতে অধীরবাবুকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করে বেশি সংখ্যক আসন কংগ্রেসের পক্ষে নিয়ে আসা যায়।