প্রতীকী ছবি।
প্রসবযন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন মহিলা। জরুরি পরিষেবার জন্য রাখা নৌকায় তাঁকে নদিয়ার বল্লভপাড়া থেকে ও পাড়ে বর্ধমানের কাটোয়ায় নিয়ে যাওয়ার পরেই তুমুল গোলমাল।
অভিযোগ, কাগজপত্র দেখার পরেই ওই প্রসূতিকে আটকে দেয় কাটোয়ার পুলিশ। জানানো হয়, গুরুতর অসুস্থদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসায় ছাড় আছে, কিন্তু প্রসব তার মধ্যে পড়ে না। ফিরিয়ে দেওয়া হয় ওই মহিলা ও তাঁর সঙ্গীদের। তাঁরা ফিরে এসে সব জানাতে এ পাড়ে বল্লভপাড়ার লোকজন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কোন যুক্তিকে প্রসবকে জরুরি প্রয়োজনের তালিকায় ফেলা হবে না সেই প্রশ্ন তুলে প্রায় চল্লিশ মিনিট বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অবিলম্বে মহিলাকে ও পাড়ে হাসপাতালে যেতে না দিলে মঙ্গলবার থেকে কাটোয়া থেকে জরুরি ভিত্তিতে খেয়া পাড়াপাড় বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত কালীগঞ্জের বিডিও নাজির হোসেনের তৎপরতায় বিষয়টি মিটমাট হয়।
বিডিও বলেন, ‘‘এ বিষয়ে বর্ধমান প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে কাউকে এমন সমস্যায় আর পড়তে না হয় সেটা ওদের বলেছি।” বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাসের কথায়, ‘‘রোগীদের সুবিধার্থে পুলিশ প্রথম থেকেই নদী পারাপার করিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি নদিয়া থেকে রোগী ছাড়াও কিছু লোক বর্ধমানে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। হয়তো তেমন কেউ ওই নৌকায় ছিলেন। তাই পুলিশের বুঝতে কোনও সমস্যা হয়েছে। প্রসূতির কথা পুলিশকর্মীদের বুঝিয়ে বললে এমন পরিস্থিতি হত না। তবে বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, কালীগঞ্জের বাসিন্দা রাজকুমার ঘোষের প্রিয়া গর্ভাবস্থায় প্রথম থেকেই কাটোয়ার এক হাসপাতালের চিকিৎসককে দেখান। সোমবার বিকালে তাঁর প্রসবযন্ত্রমা উঠলে নৌকায় কাটোয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, কাটোয়া ঘাটে পুলিশ আটকে দেয় ও তাঁদের ফিরে আসতে হয়। যন্ত্রমায় কাতরাতে থাকা মহিলাকে এ ভাবে ফেরানোয় বল্লভপাড়ার লোকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে বিষয়টি মিটমাট হয়।
রাজকুমার ঘোষের কথায়, ‘‘সকলের সাহায্যে শেষপর্যন্ত মেয়েকে নিয়ে ঘাট পার হতে পেরেছি বলে খুব ভালো লাগছে। কিন্তু ঘাট পার হওয়ার পরে দ্বিতীয় বারেও কাটোয়ার পুলিশ হয়রানি করেছে। কাটোয়ায় থাকা আমাদের আত্মীয়কে ওরা ডেকে পাঠায়। ওঁরা আসার পর আমাদের হাসপাতালে যেতে দেন। গোটা ঘটনায় আমার মেয়েটি যন্ত্রণায় কষ্ট পেয়ে গেল।”