১৫ বছরের উর্দ্ধে গাড়ি বাতিলের নির্দেশ দেয় পরিবেশ আদালত। —ফাইল চিত্র।
আগামী ছ'মাসের মধ্যে রাজ্যে ১৫ বছরের সমস্ত পুরনো গাড়ি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। উচ্চ আদালতে মামলাকারীদের আবেদন, কেন বাতিল করতে হবে ১৫ বছরের পুরনো সমস্ত গাড়ি? ব্যক্তিগত মালিকানাধীন গাড়ির ক্ষেত্রে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ পরিবর্তন করা হোক। চলতি সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হতে পারে।
গত ২৬ জুলাই জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ (কলকাতা) নির্দেশ দিয়েছিল, কলকাতা, হাওড়া-সহ গোটা রাজ্যে আগামী ছ'মাসের মধ্যে ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিল করতে হবে। পরিবেশ দূষণ রোধে এই নির্দেশ দেয় আদালত। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন মৈনাক গঙ্গোপাধ্যায় এবং অরুণাভ ঘোষ। তাঁদের মতে, পরিবেশ আদালতের নির্দেশ সারা রাজ্যের জন্য কার্যকরী হতে পারে না! এমনকি দেশের কোনও রাজ্যে এমন পদক্ষেপের উদাহরণ নেই। পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মানলে কয়েক লক্ষ গাড়ি বাতিল করতে হবে রাজ্যেকে।
মৈনাকের দাবি, ২০১৫ সালে তিনি একটি গাড়ি কেনেন। ২০০৬ সালে প্রথম বার সেটি নথিভুক্ত (রেজিস্ট্রার) করা হয়েছিল। ১৫ বছরের হিসাব অনুযায়ী ২০২১ সালে তার মেয়াদ শেষ হয়। পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য তিনি পুনরায় নথিভুক্ত করেন। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি হয়। এই অবস্থায় পরিবেশ আদালতের নির্দেশের ফলে তাঁকে গাড়িটি বাতিল করতে হবে।
মামলাকারীর আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ী জানান, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক জানায়, ব্যক্তিগত মালিকানাধীন গাড়ির বয়স ১৫ বছরের বেশি হলেও ব্যবহার করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাড়তি পরিবেশ কর (গ্রিন ট্যাক্স) দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের ওই নিয়ম মেনে গ্রিন ট্যাক্স বাড়ানো হলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু গাড়ি একেবারে নিষিদ্ধ না হওয়াই উচিত। তা ছাড়া দূষণের জন্যই যদি এত গাড়ি বাতিল করতে হয়, তবে তো বলতে হবে, সব জায়গায় দূষণ সমান নয়। কলকাতা, হাওড়ায় দূষণ বেশি, আর দার্জিলিং, পুরুলিয়ায় অনেক কম। এমনকি দুই জায়গাতে গাড়ির প্রয়োজনীয়তাও ক্ষেত্র বিশেষে আলাদা। পরিবেশ আদালতের নির্দেশের ফলে কয়েক লক্ষ গাড়ি অকেজো হয়ে যাবে।’’