প্রতীকী ছবি।
যেন কুম্ভকর্ণের ঘুম!
স্ত্রী গিয়েছিলেন বাপের বাড়ি। চুঁচুড়ার বড়বাজারের বাসিন্দা, ঘুমকাতুরে স্বামীর কাজে যেতে পাছে দেরি হয়ে যায়, সে জন্য পাশের ফ্ল্যাটের এক জনকে ফোন করে ডেকে দিতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু ঘুম ভাঙাতে যে রীতিমতো ‘যুদ্ধ’ করতে হবে, কে জানত!
কয়েক ঘণ্টা ধরে ডাকাডাকিতে কাজ হয়নি। শেষে, পুলিশ এসে দরজার তালা ভাঙার পরে ঘর থেকে ঘুম চোখে বেরিয়ে আসেন বছর বিয়াল্লিশের ওই যুবক। তার পরেই ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে সকলের। নিশ্চিন্ত হয়ে থানায় ফেরে পুলিশ।
বড়বাজারে একটি আবাসনের তিন তলার ফ্ল্যাটে থাকেন ওই দম্পতি। যুবক ট্রেন-চালক। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁর স্ত্রী বর্ধমানের মেমারিতে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন। যুবক ফ্ল্যাটে একাই ছিলেন। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ মহিলা এক পড়শিকে ফোন করে বলেন, তিনি যেন স্বামীকে ডেকে দেন। পড়শিরা জানান, সেই মতো ওই ব্যক্তি ডাকতে যান। অনেকক্ষণ পরেও সাড়া না মেলায় তিনি অন্যদের ডাকেন। সকলে মিলে সুর চড়িয়ে বহু ডাকাডাকি, অসংখ্যবার কলিং বেল বাজানো, দরজায় ধাক্কাধাক্কি সত্ত্বেও ভিতর থেকে কোনও সাড়া মেলেনি।
এর পরে পড়শিরা যুবকের স্ত্রীকে ফোন করে বিষয়টি জানান। বিপদ আঁচ করে তিনি দরজা ভাঙার পরামর্শ দেন। ততক্ষণে দুপুর গড়িয়েছে। খবর পেয়ে বেলা ২টো নাগাদ চুঁচুড়া থানার পুলিশ আসে। কিন্তু পুলিশের হাঁকডাকেও কাজ হয়নি। শেষে মিস্ত্রি ডেকে ছেনি-হাতুড়ির ঘায়ে কোলাপসিবল গেটের তালা ভাঙা হয়। ভাঙা হয় কাঠের দরজা। এর পরেই ঘুম-ঘুম চোখে বেরিয়ে আসেন যুবক।
ঘরের সামনে ভিড়, পুলিশ দেখে দৃশ্যতই অবাক বনে যান তিনি। চোখ ডলতে ডলতে বলেন, ‘‘কী হয়েছে? এত লোক কেন? দরজাটা খুললেন কী করে?’’ ধাতস্থ হওয়ার পরে বলেন, ‘‘একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।’’
এক পড়শি বলেন, ‘‘এমন ঘুম বাপের জন্মে দেখিনি। কী ভয়টাই না পেয়ে গিয়েছিলাম! যাক, উনি যে সুস্থ রয়েছেন, এটাই ঢের।’’
না, আর বিয়েবাড়ির জন্য থাকা হয়নি স্ত্রীর। আনন্দ-হইচই সরিয়ে রেখে ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন তিনি।