—প্রতীকী ছবি।
চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের এক হোমগার্ডের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের নাম দেবাশিস দেবনাথ। বিভাগীয় কমিশনারের বাংলোয় কর্মরত তিনি। অন্য দিকে, রাজগঞ্জ থানায় কর্মরত কনস্টেবল সুশান্ত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। দু’জনকেই পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খাণ্ডবহালে বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলাযাবে না।’’
অভিযুক্ত হোমগার্ড দেবাশিসের বাড়ি ময়নাগুড়ির পানবাড়িতে এবং শ্বশুরবাড়ি কোচবিহার জেলার ঘোষকাডাঙা এলাকায়। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির এলাকায় দেবাশিস নিজেকে প্রভাবশালী বলে পরিচয় দিয়ে পুলিশে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলেন। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় দিনকয়েকআগে অভিযোগ দায়ের করেন কয়েক জন যুবক। শুক্রবার অভিযোগকারীদের থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। অভিযোগকারীরা কোন কোন মাধ্যমে হোমগার্ডকে টাকা দিয়েছিলেন, সে সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এ দিন ময়নাগুড়ি থেকে দেবাশিসের স্ত্রী দীপা দেবনাথজানান, তাঁর স্বামীর এই সব ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তিনি আরও জানান, কিছু দিন ধরে তিনি বাড়ি আসছেন না এবং বাড়িতে বেশকিছু লোকজন যাওয়া-আসা করায় তাঁরও সন্দেহ হয়েছিল, কিছু একটা সমস্যা হয়েছে।
আড়াই বছর ধরে টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তা হলে এত দিনে বিষয়টি প্রকাশ্যে এল কেন, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। সূত্রের দাবি, টাকা দেওয়ার পরে চাকরির জন্য অপেক্ষা শুরু করেন যুবকেরা। সরকারি তরফে সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয়। দিন কয়েক আগে অভিযুক্ত হোমগার্ডের পানবাড়ির বাড়িতে যান চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, তাঁদের জানানো হয়, টাকা পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে এবং তা ফেরত পাওয়া সম্ভব নয়। অভিযোগকারী মাথাভাঙার বাসিন্দা চন্দন দাস বলেন, ‘‘ছেলেকে পুলিশের চাকরি দেবে বলে সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন দেবাশিস। টাকা ফেরত দেননি। বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করেছি।’’ ফালাকাটার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘একাধিক যুবকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন ওই হোমগার্ড। জানতে পেরে আমরা বিভাগীয় কমিশনার-সহ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’
অন্য দিকে, রাজগঞ্জ থানায় কর্মরত কনস্টেবল সুশান্ত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। ধূপগুড়ির এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘আমার স্ত্রীকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে কয়েক দফায় আট লক্ষ টাকানেওয়া হয়েছিল।’’
টাকা তোলার ঘটনার নেপথ্যে কোনও চক্র রয়েছে কি না, জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। সরকারি অন্য চাকরি দেওয়ার নামেও টাকা তোলা হত কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।