কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
রেশন কেলেঙ্কারি নিয়ে তোলপাড় চলছে রাজ্যে। এ বার সেই বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টে
সরাসরি চিঠি দিলেন এক সরকারি আধিকারিক। চিঠিতে জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও নানা দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন তিনি। বুধবার ওই চিঠির বিষয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তাঁর নির্দেশ, আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সিআইডিকে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে হবে।
সূত্রের খবর, ওই চিঠিতে শাসক দলের দু’জন নেতার নামও লিখেছেন ওই আধিকারিক। তাঁদের মধ্যে এক জন শাসক দলে থাকলেও বর্তমানে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন বলেই তাঁর দাবি।
গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ এবং মন্ত্রীদের গ্রেফতারির ঘটনা আলোড়ন ফেলেছে রাজ্যে। তবে কোনও সরকারি আধিকারিক দুর্নীতির অভিযোগ করে আদালতে চিঠি দিচ্ছেন, এমন ঘটনা কার্যত বিরল বলেই মনে করছেন অনেকে। সূত্রের খবর, নিজের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে জেনেও তিনি ওই চিঠি দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিক।
সূত্রের খবর, ওই অফিসার দাবি করেছেন যে জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগ এবং রেশন দুর্নীতির নানা তথ্য তিনি জানেন। তাঁর অভিযোগ, জিটিএ-র অধীনে ৩১৩ জন শিক্ষককে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। মূলত টাকার বিনিময়ে নিয়োগ হয়েছে এবং সেই টাকা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় খাটছে। চিঠিতে দু’টি মোবাইল নম্বর দিয়েছেন তিনি এবং সেই নম্বরগুলির মধ্যে মেসেজে যে কথোপকথন হয়েছে তা থেকে এই তথ্য পাওয়া যাবে বলেও তিনি দাবি করেছেন।
একটি সূত্রের দাবি, ওই শিক্ষক নিয়োগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম যেমন আছে তেমনই এক জিটিএ নেতার নাম আছে। উঠে এসেছে রাজ্যের শাসক দলের এক শীর্ষ নেতার নামও। এই দুর্নীতির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ওই চিঠিতে মুর্শিদাবাদের এক শিক্ষকের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হয়েছে। ওই সরকারি অফিসারের দাবি, ওই শিক্ষক সম্প্রতি চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছেন।
বেআইনি নিয়োগে তদন্ত শুরু হতেই তিনি ইস্তফা দেন।
রেশন দুর্নীতিরও নানা ‘তথ্য’ তিনি ওই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। প্রসঙ্গত, ওই মামলায়
প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ দু’জন গ্রেফতার হয়েছেন। সূত্রের খবর, সেই প্রসঙ্গে হাবড়ার এক নেতার নাম উল্লেখ করেছেন সরকারি অফিসারটি। তিনি এ-ও দাবি করেছেন যে ওই নেতা রাজ্যের শাসক দলে থাকলেও বর্তমানে বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করেছেন। রেশন দুর্নীতির টাকা লেনদেনে ওই নেতার ভূমিকা আছে বলে চিঠিতে দাবি করা হয়েছে।
চিঠিতে নানা বিস্ফোরক তথ্যের দাবি করা হলেও সরকারের একটি সূত্রের বক্তব্য, ওই চিঠির তথ্য আদৌ সত্য কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বহু ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত রোষের কারণেও এমন চিঠি লেখা হতে পারে।