জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্র বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ২৪ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে শনিবার সন্ধেয় থানায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ জমা দিলেন প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। শনিবার দিনভর অচলাবস্থা ছিল কলেজে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ দিন সকালে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেন কর্তৃপক্ষ। এতে অনশন করেন দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা। শুক্রবার সকাল থেকে ঘেরাও হয়ে থাকা অধ্যক্ষকে শনিবার বিকেলের পর উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি আইসিসিইউতে চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে গোলমাল শুরু হয় জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে৷ ওই দিন দুপুরে দ্বিতীয় বর্ষের কিছু ছাত্র হস্টেলে ঢুকে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে মারধর করে বলে অভিযোগ। তাকে তিনতলা থেকে ফেলে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয় বলে দাবি ওই ছাত্রের। তার বাবা ভরত দাস আসানসোল পুরসভার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তিনি বলেন, ‘‘র্যাগিং হয়েছে ভয়ঙ্করভাবে। ছেলেকে কী ভাবেই না মেরেছে। ওর শরীরের বিভিন্ন অংশে দাগ পড়েছে৷৷ অতিরিক্ত জেলাশাসকদেরও জানিয়েছি।’’ ওই ছাত্র সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে র্যাগিয়ের অভিযোগ করেন। প্রথম বর্ষের অন্য ছাত্ররাও জানান, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা তাদের মারধর করে। বৃহস্পতিবার র্যাগিং এর মাত্রা বেশি হওয়ায় কয়েক জন প্রতিবাদ করে। তখনই গোলমাল। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান দীপককুমার কোলে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ান। এর পরেই দীপকবাবুর বিরুদ্ধে তাঁদেরই দুই ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ তুলে তাঁকে ক্যাম্পাস থেকে সরানোর দাবিতে শুক্রবার আন্দোলন শুরু করেন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা। তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের কিছু ছাত্রও যোগ দেয়। দিনভর ক্যাম্পাসে আটকে থাকেন অধ্যক্ষ অমিতাভ রায়-সহ অন্য অধ্যাপকরা৷ আলোচনায় জট কাটাতে পারেননি পুলিশ কর্তারা৷ আন্দোলন থামাতে শনিবার সকালে হস্টেল ছাড়ার জন্য দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের নির্দেশ দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু ছাত্ররা তা না মেনে অনশন শুরু করেন। দুপুরের দিকে জলপাইগুড়ির দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক মলয় হালদার ও সুমেধা প্রধান ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন৷ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতিও৷ কিন্তু সমস্যা মেটেনি৷
প্রথম বর্ষের ছাত্রদের একাংশের অভিযোগ, র্যাগিং ধামাচাপা দিতেই দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা আন্দোলনে নেমেছেন৷ তৃতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছাত্রও তাতে সামিল হন৷ প্রথম বর্ষের কিছু ছাত্রকেও সামিল হতে চাপ দেওয়া হচ্ছে৷ কলেজের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির সদস্য তথা হোস্টেল কো-অর্ডিনেটর বিবেকানন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘‘র্যাগিং নিয়ে অভিযোগ পাইনি৷’’