কলকাতা হাই কোর্ট। নিজস্ব চিত্র।
কলেজ যাওয়ার পথে নিখোঁজ দুই তরুণী। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও খোঁজ মেলেনি তাঁদের। প্রায় চার মাস হতে চলল নিখোঁজ তাঁরা। অবশেষে পুলিশের উপর ভরসা হারিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন অসহায় বাবা। উচ্চ আদালতে বাবার আর্জি, এত দিনেও দুই মেয়েকে খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ। মেয়েদের বাড়ি ফেরাতে সাহায্য করুক আদালত। সোমবার মামলাটি শুনতে পারে হাই কোর্ট।
ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুরের। গত ১২ এপ্রিল সকাল ৯টা নাগাদ ২৪ এবং ২০ বছর বয়সি দুই তরুণী কলেজ যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। পরিবারের দাবি, সন্ধ্যা হয়ে গেলেও তাঁরা আর বাড়িতে ফেরেননি। তাঁরা বন্ধুদের বাড়িতে যেতে পারেন বলে প্রথমে অনুমান করা হয়। কিন্তু রাত পর্যন্ত না আসায়, শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। অনেক খুঁজেও পাওয়া যায়নি দুই তরুণীকে। ওই দিন রাতেই সাহায্য চাইতে থানায় যায় পরিবার। তাদের অভিযোগ, পুলিশ পরামর্শ দেয় আশপাশের এলাকা এবং হাসপাতালে গিয়ে ভাল করে খোঁজ করতে। সেই মতো ফের রাতভর খোঁজ শুরু হয় বাড়ির মেয়েদের। কিন্তু তার পরও তাঁদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পর দিন ফের থানায় যায় পরিবার। ১৩ এপ্রিল বর্ধমান থানায় ‘মিসিং ডায়েরি’ করা হয়।
বাবার দাবি, মাসখানেক সময় পেরিয়ে গেলেও দুই মেয়েকে ফেরাতে থানার তরফ থেকে কোনও আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ করা হয়নি। বাধ্য হয়ে ১২ মে জেলার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। তবে তাতেও শেষ পর্যন্ত আশাহত হন বলে দাবি বাবার! পরিবারের বক্তব্য, মেয়েদের খুঁজতে খুঁজতে আমরা প্রায় যখন ক্লান্ত, ঠিক তখনই একটু আশা দেখিয়ে ফোন এল মেয়েদের। ৩০ মে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন করেন মেয়েরা। কথা হয় কয়েক সেকেন্ড। তার পরই ফোনটি কেটে যায়। আর ফোনে পাওয়া যায়নি। বাবার দাবি, ওই সময়ে মেয়েদের গলা শুনে মনে হয়েছে তাঁরা খুব ভয়ে এবং আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁরা কোনও হিন্দিভাষী রাজ্যে থাকতে পারেন বলে অনুমান। পুরো বিষয়টি ফের পুলিশকে জানানো হয়। পরিবার বলছে, ১২ জুলাই ঘটনার তিন মাস পর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য পুলিশকে চিঠি লিখে অনুরোধ করা হয়।
পুলিশের কাছ থেকে আশার আলো না দেখতে পেয়ে অগস্টের প্রথম সপ্তাহে উচ্চ আদালতে দরবার করেন অসহায় বাবা। আর্জি, তাঁর মেয়েদের কেউ অপহরণ করেছেন। খুঁজে বের করার ব্যবস্থা করুক আদালত। সোমবার মামলাটির শুনানি হতে পারে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজা বসুচৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে।