আবাসে দুর্নীতির তদন্তে কেন্দ্রীয় দল এসেছে রাজ্যে। প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ‘দুর্নীতি’র তদন্তে আবার রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। প্রথম দফায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ঘুরে কেন্দ্রীয় দল যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে কিছু ‘অসঙ্গতি’ থাকায় এ বার সচিব পর্যায়ের দুই সদস্যের মোট ১০টি কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয়েছে বলে খবর প্রশাসনিক সূত্রে। বুধে পূর্ব বর্ধমানের পর বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখেন কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য।
আবাস যোজনায় ‘দুর্নীতি’র অভিযোগের তদন্তে কেন্দ্রীয় দলের দ্বিতীয় দফার এই সফর নিয়ে কটাক্ষ করেছে রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের মত, এ সব আসলে সময় কাটানোর খেলা! ইচ্ছে করে তদন্ত প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হচ্ছে। আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রদীপ বলেন, ‘‘রাজ্যের ১০টি জেলায় দ্বিতীয় দফার এই তদন্ত চলছে। ইচ্ছে করে তদন্ত প্রক্রিয়ায় দেরি করা হচ্ছে। প্রথম রিপোর্ট গেল। আবার দল এল। দ্বিতীয় রিপোর্ট যাবে। আবার দল আসবে। এই ভাবে চলতেই থাকবে।’’ কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তরাষ্ট্র কাঠামো নিয়ে ‘ছেলেখেলা’ করছে বলেও অভিযোগ করেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী। রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, দ্বিতীয় দফার এই তদন্ত প্রক্রিয়া ৪ এপ্রিলের মধ্যে মিটিয়ে ফেলার কথা ছিল কেন্দ্রের। কিন্তু তা হয়নি। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের বিষয়টি নজরে রেখেই হয়তো এই ভাবে গোটা প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা হচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের রানিনগর ১ ব্লকের হেরামপুরের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অন্তর্গত কাঞ্চনপুর, ডিহিপাড়া, দুর্লভপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় যান প্রতিনিধিরা। সেই দলে ছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের আবাস বিষয়ক দফতরের যুগ্ম সচিব অমিত শুক্লা এবং ওই দফতরের ডিরেক্টর দেবেন্দ্র কুমার। আগের রিপোর্টে যে সব অসঙ্গতি ধরা পড়েছে, তার ভিত্তিতে মোট ৬টি তালিকা তৈরি করে তা ধরে উপভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরাও। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘রানিনগরে তদন্ত চলছে। প্রতিনিধি দল অন্য কোনও জেলায় গিয়েছে কি না, সেই ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই।’’
বুধবার বর্ধমানেও একটি কেন্দ্রীয় দল যায়। সরাইটিকর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আমাড় এবং কোমলপুর গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি পরিদর্শন করে ওই দলটি। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় দলের কাছে অভিযোগ ছিল, পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও অনেকেই এই যোজনার উপভোক্তা। তারই তদন্ত করছিলেন কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য। তাঁরা মেমারির বোহার গ্রাম পঞ্চায়েতের সোতলাতেও যান। বোহার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাসমত মোল্লা বলেন, ‘‘বাড়িতে বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা লেখা আছে কি না, মূলত সেটা দেখতে এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। এ ছাড়া বাড়িগুলিতে যাঁদের থাকার কথা, তাঁরা থাকেন কি না, তা-ও দেখছিলেন।’’ জেলাশাসক প্রিয়ঙ্কা সিংলা বলেন বলেন,‘‘ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা দু’দিন জেলার কয়েকটি ব্লকে গিয়ে আবাস যোজনা তালিকা নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। আমরা যথাসাধ্য সাহায্য করেছি।’’