কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
নিজেদের নিয়ম না-মেনে রাজ্যের শিক্ষা দফতর শিক্ষক বদলি করছে, এমন অভিযোগের পাশাপাশি এ বার পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কর্মী বদলি নিয়ে মামলা হল কলকাতা হাই কোর্টে। কলকাতা থেকে এক প্রবীণ কর্মীকে উত্তরবঙ্গে বদলি করেছিল পর্ষদ। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না-করেই সেই বদলি হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়। সেই বদলির নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানিয়েছে, সুব্রত চক্রবর্তী নামে ওই কর্মী উত্তরবঙ্গের বদলে আপাতত পর্ষদের সদর দফতর ডিরোজ়িয়ো ভবনেই কাজ করবেন। মায়ের অসুস্থতার জন্য প্রয়োজনে বাড়ির কাছাকাছি অন্য কোনও অফিসেও তাঁকে নিযুক্ত করতে পারে পর্ষদ।
বদলির নির্দেশের পরে সুব্রত হাই কোর্টে মামলা করলেও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা পর্ষদের নির্দেশ বহাল রাখেন। সুব্রত উত্তরবঙ্গে যোগ দিলেও ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানান। আদালতে সুব্রতের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌগত মিত্র জানান, পর্ষদের নিয়ম, সাধারণ ভাবে ৫২ বছরের বেশি বয়সের কোনও কর্মীকে বদলি করা যায় না। সুব্রতের বয়স ৫৫ বছর। কিছু ক্ষেত্রে সেই নিয়মের ব্যতিক্রম আছে। তবে বিপত্নীক সুব্রতের অশীতিপর মা অসুস্থ অবস্থায় শয্যাশায়ী এবং সুব্রত ছাড়া তাঁকে দেখভালের কেউ নেই। এই অবস্থায় বদলির নিয়মই নেই। বদলির নির্দেশে পর্ষদ-সভাপতি স্বাক্ষর করলেও কোনও নির্দিষ্ট কারণও দেখাননি।
পর্ষদের আইনজীবী কোয়েলি ভট্টাচার্যের দাবি, বদলির নির্দেশ সঙ্গত এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্যই সুব্রতের বদলি জরুরি। ১৯৯১ সাল থেকে সুব্রত একই জায়গায় চাকরি করছেন বলেও পর্ষদের দাবি। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, সুব্রতকে অতীতে এক বার বর্ধমানে বদলি করে পর্ষদই ফিরিয়ে আনে। বদলি সংক্রান্ত নীতি বিস্তারিত ভাবে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আদালতের নির্দেশে সুব্রত ডিরোজ়িয়ো ভবনে কাজে যোগ দিতে গেলে পর্ষদের সচিব তাঁকে উত্তরবঙ্গ থেকে ‘রিলিজ় অর্ডার’ নিয়ে আসতে বলেন। সেই নির্দেশ আনতে অসুস্থ মাকে কলকাতায় রেখে সুব্রত উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন।