Anganwadi Centre

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবন ভেঙে নিজের দোতলা বাড়ি, অভিযুক্ত কর্মীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

অভিযোগ, সাইনুর খাতুন এবং তাঁর স্বামী পরিকল্পনা করে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পুরনো ভবন ভেঙে সেখানে অট্টালিকা তৈরি করেছেন। অথচ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু ও মায়েদের বসার জায়গা নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:৫৪
Share:

মঙ্গলবার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অভিযুক্ত কর্মীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নানা খাতে বরাদ্দ অর্থ আত্মসাৎ করে দোতলা বাড়ি তৈরি করেছেন এক মহিলা কর্মী এবং তাঁর স্বামী। শুধু তা-ই নয়, ওই কেন্দ্রের পুরনো ভবন ভেঙে সেখানেই তাঁদের প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরি করেছেন বলেও অভিযোগ। এই অভিযোগে মঙ্গলবার ওই কর্মীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দারা। তাঁদের আরও অভিযোগ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে ভাল খাবার পায় না গ্রামের বাচ্চারা।

Advertisement

হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের মালিওর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ তালশুর গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সাইনুর খাতুনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন স্থানীয়েরা। এ নিয়ে মঙ্গলবার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও) বিজয় গিরির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিক্ষোভকারী অভিভাবকেরা। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাইনুর এবং তাঁর স্বামী পরিকল্পনা করে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পুরনো বিল্ডিং ভেঙে সেখানে নিজেদের বসবাসের জন্য দোতলা অট্টালিকা তৈরি করেছেন। অথচ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু ও মায়েদের বসার জায়গা নেই। দীর্ঘ দিন ধরে নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে না খাবার। খাবার চাইতে গেলে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। অভিভাবকদের আরও অভিযোগ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ অর্থ আত্মসাৎ করছেন সাইনুর। গ্রামের এক মহিলার দাবি, মা ‘‘আমাদের বাচ্চারা দু’বছর ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যাচ্ছে। তবে ভাল খাবারদাবার পাচ্ছে না তারা।’’

গ্রামবাসীদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাইনুর। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজে যুক্ত ছিলেন তিনি। তাই চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। সাইনুরের কথায়, ‘‘যাঁরা এ সব বলছেন, ভুল বলছেন। আবাস যোজনায় আমি সার্ভে করেছিলাম। সেখানে যাঁদের নাম ওঠেনি, তাঁরাই আমার ক্ষতি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। আমার স্বামী ব্যবসা করেন। এলআইসি-র এজেন্ট। দু’বস্তা চাল বিক্রি করে কি আমি দোতলা বাড়ি করে নিতে পারি?’’

Advertisement

এ দিকে গোটা ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। কেন্দ্রের পাঠানো টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে বলে শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির মালদহ জেলা কমিটির সদস্য কিসান কেডিয়া বলেন, ‘‘দক্ষিণ তালশুর গ্রামের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে বলে শুনেছি। বাচ্চাদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এ রাজ্যের তৃণমূল সরকার গরিব বাচ্চাদের ওই খাবার দিচ্ছে না। তৃণমূলের নেতারা ওই অঙ্গনবাড়ির কেন্দ্রের টাকা ভাগ করে গাড়ি-বাড়ি করছেন। তৃণমূলের বিদায়ের ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের আয়ের উৎস নিয়ে তদন্ত করে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করব।’’

প্রকৃত ঘটনা খতিয়ে দেখে প্রশাসন পদক্ষেপ করবে বলে দাবি করেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। মালদহ জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান, ‘‘বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে ওই কর্মী দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ অন্য দিকে, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি বলেছেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে সমগ্র ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement