প্রতীকী ছবি।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার শরিক না হওয়ায় বিভিন্ন সময় কেন্দ্রের সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজ্য। এ বার রাজ্যের প্রায় ৭৫ লক্ষ কৃষককে বিমার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
কৃষি দফতরের দাবি, গতবার রবি চাষের সময় ৪০ লক্ষ চাষিকে রাজ্যের বিমার আওতায় আনা হয়েছিল। এখন আউস, আমন, পাট ইত্যাদির চাষ শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে এ বার বিমা পরিষেবায় সব কৃষককেই অন্তর্ভুক্ত করার জোরদার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা থেকে আগেই বেরিয়ে এসেছে রাজ্য। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রের প্রকল্পে প্রিমিয়ামের ২৫ শতাংশ কৃষককে দিতে হয়। রাজ্য ২৫ শতাংশ ও কেন্দ্র ৫০ শতাংশ টাকা দেয়। নিজেদের বিমা প্রকল্পে একশো শতাংশ প্রিমিয়াম দেয় রাজ্য সরকার। কৃষককে প্রিমিয়ামের বোঝা বইতে হয় না।
গত বছর ৪০ লক্ষ কৃষকের প্রিমিয়াম বাবদ প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচ করেছিল রাজ্য। এ বার প্রকল্পের পরিধি বাড়ায় প্রিমিয়ামের অঙ্ক ১০০০ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রের অনুমান। জেলাস্তরের কৃষি-কর্তাদের মাধ্যমে বিমার ব্যাপক প্রচার শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে বিমা সংস্থাগুলির সঙ্গেও পাকা কথা হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, “একশো শতাংশ কৃষককেই এই সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। এই প্রকল্প পুরোটাই রাজ্যের।”
এই কর্মকাণ্ডে জমি-ফসলের স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ এবং ক্ষতি-সমীক্ষার পদ্ধতিতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে রাজ্য। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সবুজের ঘনত্ব দেখা হবে। ঘন সবুজের অর্থ ফসলের স্বাস্থ্য ভাল। ফিকে সবুজ ফসলের খারাপ স্বাস্থ্যের লক্ষণ। প্রযুক্তির মাধ্যমে বন্যা, খরা বা পোকার প্রকোপ খতিয়ে দেখা হবে। প্রদীপবাবুর কথায়, “বিমা সংস্থাগুলির সঙ্গে ইসরোর কথা বা চুক্তি হয়েছে। রাজ্য সরকার সমন্বয় রাখছে। এতে ফসল ক্ষতির সমীক্ষা দ্রুত করা সম্ভব। তা হলে তাড়াতাড়ি ক্ষতিপূরণও পাবেন চাষিরা।”
শুরুতে শুধু স্যাটেলাইট সমীক্ষার উপরেই নির্ভর করবে না রাজ্য। এর পাশাপাশি সরাসরি গিয়েও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ করা হবে। দু’টি তথ্য যাচাই করে তা কৃষকদের জানানো হবে। কৃষিকর্তাদের দাবি, এতে ক্ষতিপূরণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরির অবকাশ থাকবে না।