রবিবারও কলকাতায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার।
ডেঙ্গির প্রকোপ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। উদ্বেগ তৈরি হয়েছে মূলত কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিঙে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রবিবার রাজ্যে আরও ৫৪৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। শনিবারের তুলনায় রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বাড়ল। কলকাতা, হাওড়া ও উত্তরপাড়া পুরসভা এলাকায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি বেশ জটিল। কলকাতার পাশাপাশি সংলগ্ন জেলার পুরসভাগুলিতেও যাতে ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজে কোনও খামতি না থাকে, সে দিকে নজর দিতে ইতিমধ্যেই নিজে বৈঠক করেছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে নয়। বরং আগামী সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
রবিবারও কলকাতায় এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। হরিদেবপুরের বাসিন্দা ওই রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শেষ পর্যায়ে তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ায় ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দিতে হয়েছিল। মৃত্যুর কারণ হিসেবে মৃত্যুর শংসাপত্রে ‘ডেঙ্গি শক সিনড্রোম’-এর কথা লেখা রয়েছে। এই নিয়ে গত সাত দিনে চার জনের মৃত্যু হল শহরে। ঘটনাচক্রে, মৃতদের মধ্যে তিন জনই মহিলা। এঁদের মধ্যে দু’জন আবার হরিদেবপুরের ব্যানার্জি পাড়ার বাসিন্দা। পুজোর আগেই শহরে ডেঙ্গির এই উপদ্রবে প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
দক্ষিণ কলকাতার পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য ভাবে খারাপ। সেখানকার একাধিক ওয়ার্ডের ঘরে ঘরে জ্বরে আক্রান্ত মানুষ। অনেকেই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ডেঙ্গি নিয়ে শহরবাসীকেই সচেতন হতে বলেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ। শনিবার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমিও কয়েকটি জায়গা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে পুরকর্মীরা এলাকা পরিষ্কার করে দিলেও সাধারণ মানুষ আবার নোংরা করে দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে যদি সাধারণ মানুষ সচেতন না হন, তা হলে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে কষ্ট হবে।’’
অন্য দিকে, ডেঙ্গি নিয়ে বিশেষ বৈঠক হয়েছে হাওড়ার নিউ কালেক্টররেট বিল্ডিংয়ে। ডিরেক্টর অব হেলথ সার্ভিস সিদ্ধার্থ নিয়োগীর নেতৃত্বে ওই বৈঠক যোগ দেন জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা ও হাওড়া পুরসভার আধিকারিকরা। ড্রোন ব্যবহার করে বিভিন্ন এলাকায় জমে থাকা জলের সন্ধানও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। যেখানে জমা জলের সন্ধান মিলবে, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।