সুনিধি শর্মা
লেক টাউনের তিন বছরের শিশু অহর্ষি ধর মারা গিয়েছিল রবিবার রাতে। তার তিরিশ ঘণ্টার মধ্যে, মঙ্গলবার সকালে ডেঙ্গির বলি হল আরও একটি শিশু। হুগলির শ্রীরামপুরের বাসিন্দা পাঁচ বছরের সুনিধি শর্মা মারা গিয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
সুনিধির পরিবারের লোকেরা জানান, গত ১২ নভেম্বর তার জ্বর হয়েছিল। ওই দিনই স্থানীয় এক চিকিৎসককে দেখানো হয়। পর দিন রক্ত পরীক্ষায় মেয়েটির শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মেলে। ওই দিনই তাঁকে শ্রীরামপুরের বটতলার কাছে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। রবিবার সকালে তাকে আনা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ সেখানেই সে মারা যায়। মৃত্যুর শংসাপত্রে চিকিৎসক ডেঙ্গির কথা উল্লেখ করেছেন।
মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘রবিবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে আনা হয়েছিল। প্লেটলেট কম ছিল। এতটাই খারাপ অবস্থা ছিল যে নাড়ির স্পন্দন, রক্তচাপ কিছুই রেকর্ড করা যাচ্ছিল না। ডেঙ্গি হেমারেজিক জ্বরে শক থেকে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।’ চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ, মেয়েটির শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল। তাই রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক ভাবে হচ্ছিল না। সেই কারণে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যায়।
এ দিনের ঘটনার পরে ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভার অভিযান প্রশ্নের মুখে পড়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সুনিধির বাড়ির গলিতে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হয়েছে। অদূরেই রাস্তার ধারে ডাঁই হয়ে জমে রয়েছে আবর্জনা। জঞ্জাল পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে নর্দমা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, ওই এলাকায় কিছু দিন ধরেই জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ চলছে। সাফাই অনিয়মিত। মশার লার্ভা মারার তেলও নিয়মিত ছড়ানো হয় না। সুনিধির বাবা চটকল-শ্রমিক কানাইলাল শর্মার ক্ষোভ, ‘‘নিয়মিত সাফাই হয় না। আজই রাস্তায় ব্লিচিং ছড়নো হয়েছে।’’