মুষ্টিভিক্ষা নিচ্ছেন জেপি নড্ডা। ছবি পিটিআই।
বিজেপি-র কর্মসূচির ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই ‘ভোলবদল’ করলেন জেপি নড্ডাকে মুষ্টিভিক্ষা দেওয়া পূর্ব বর্ধমানের পাঁচ কৃষকের পরিবার। শনিবার বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডাকে ‘ভিক্ষা’ দেওয়ার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের পরের দিনই তাঁরা কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন। এই ঘটনা ঘিরে শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে চাপানউতোর শুরু হল বিজেপি-র। ওই কৃষকদের ভয় দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি-র। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের দাবি, নড্ডাকে ভিক্ষাদানের পর যাতে ‘ভুল’ বার্তা না যায়, সে জন্যই তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ওই কৃষকদের পরিবার।
শনিবার পূর্ব বর্ধমানে এক জনসভায় ‘কৃষক সুরক্ষা অভিযান’ কর্মসূচির ঘোষণা করেন নড্ডা। কাটোয়ার মুস্থুলী গ্রামের মোড়ে ওই জনসভায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মুস্থুলী গ্রামের বাসিন্দা নিতাই মণ্ডল, পাঁচকড়ি মণ্ডল, সনৎ মণ্ডল, উত্তম মণ্ডল এবং মথুরা মণ্ডল নামে পাঁচ কৃষকের বাড়ি বাড়ি ঘুরে এক মুঠো করে ধান ভিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। শেষে ওই পাড়ারই মথুরা মণ্ডল নামে আরও এক কৃষকের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন সারেন।
ওই কর্মসূচির ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রবিবার সন্ধ্যায় কাটোয়া স্টেশন রোডে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন ওই কৃষকের পরিবারের সদস্যরা। রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন নিতাই মণ্ডল, মথুরা মণ্ডল এবং পাঁচকড়ি মণ্ডলের ছেলে মিঠুন মণ্ডল। সঙ্গে ছিলেন সনৎ মণ্ডলের বাড়ির সদস্যও। ওই পাঁচ কৃষক পরিবারের সদস্যদের এই ‘ভোলবদলে’-র ঘটনা ঘিরে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: শোভন-বৈশাখীর ‘প্রায়শ্চিত্ত’ মিছিল সোমবার, আলাদা মিছিল সেই রাকেশেরও
তৃণমূল ওই পাঁচ কৃষকের পরিবারের সদস্যদের ভয় দেখিয়ে বিধায়কের কার্যালয়ে ডেকে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপি-র বর্ধমান পূর্ব (গ্রামীণ) জেলা কমিটির সহ-সভাপতি অনিল দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘এটাই তৃণমূলের কালচার। আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব আতিথেয়তা গ্রহণের জন্য রাজ্যের যেখানেই গিয়েছেন, পরবর্তী কালে সেই পরিবারের সদস্যদের ভয় দেখিয়ে (তৃণমূলে) দলে টানা হয়েছে। তবে তৃণমূল যতই চেষ্টাই করুক না কেন, ২০২১ সালে এর যোগ্য জবাব দেবে মানুষ।’’
তবে বিজেপি-র এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘মুস্থুলী গ্রামের যে কৃষকদের বাড়িতে নড্ডাসাহেব ভিক্ষাগ্রহণ করতে গিয়েছিলেন, সেই সমস্ত পরিবারের সদস্যরা বরাবরই তৃণমূলে সঙ্গে রয়েছেন। কেউ ভিক্ষার জন্য গেলে তাঁদের খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না বাংলার মহিলারা। এটাই বাংলার বৈশিষ্ট। তাই তাঁরা সৌজন্য দেখিয়ে নড্ডাকে ভিক্ষা দিয়েছেন মাত্র।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যাতে ভুল বার্তা না যায় তাই ওই সমস্ত কৃষক পরিবারের সদস্যরা এ দিন দলীয় কার্যালয়ে এসে আমার সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেন।’’
আরও পড়ুন: শোভন-বৈশাখী অবশেষে বিজেপি দফতরে, স্বাগত জানাতে একা শঙ্কু
শাসক-বিরোধীর এই তরজার মাঝে ওই পাঁচ কৃষক পরিবারের সদস্যদের দাবি, ‘‘বিজেপি-র সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ নেই। আমরা তৃণমূলেই আছি।’’