Dengue Deaths In West Bengal

ডেঙ্গির বলি শহরের আরও দুই, এক দিনে রাজ্যে মৃত চার জন

সব মিলিয়ে শুক্রবার রাজ্যে চার জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হল। যদিও রাজ্যে মোট কত জনের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে, সরকারি ভাবে সেই পরিসংখ্যান এখনও জানায়নি স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৫:২১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

প্রায় প্রতিদিনই ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবর সামনে আসছে। রাজ্যের কোনও না কোনও প্রান্তে মশাবাহিত ওই রোগে মারা যাচ্ছেন সব বয়সি মানুষ। শুক্রবার ফের মৃ্ত্যু হল কলকাতা এবং বিধাননগরের দুই বাসিন্দার। অন্য দিকে, খড়্গপুর এবং ঘাটালে আরও দু’জনের এ দিনই ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে এ দিন মৃত্যু হয় সল্টলেকের বাসিন্দা পিনাক সরকারের (৬৬)। তিনি এ ই ব্লকের বাসিন্দা। ওই হাসপাতালেই এ দিন কলকাতার বাসিন্দা কল্পনা নন্দী (৭৮) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাড়ি কলকাতা পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘা যতীনের রিজেন্ট এস্টেটে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, দু’জনের ডেথ সার্টিফিকেটেই ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোম ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হওয়ার
উল্লেখ রয়েছে।

সব মিলিয়ে শুক্রবার রাজ্যে চার জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হল। যদিও রাজ্যে মোট কত জনের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে, সরকারি ভাবে সেই পরিসংখ্যান এখনও জানায়নি স্বাস্থ্য দফতর। তবে বেসরকারি সূত্রের হিসাবে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪১।

Advertisement

চলতি মরসুমে বিধাননগরে এই প্রথম ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল। প্রৌঢ়ের পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, অগস্টের ২৭ তারিখ তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। ২৮ তারিখ ডেঙ্গি রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তাঁকে সল্টলেকের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ পিনাককে বাইপাসের ধারের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চলতি মাসের শুরুতে প্রৌঢ়ের মেয়ে এবং নাতিও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন।

স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি তথা বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘যে বাড়ির বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে, ওই গলিতেই ১১ জন আক্রান্ত। পুরসভা ডেঙ্গি মোকাবিলায় কাজ করছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বহু নাগরিক সতর্ক না হয়ে বাড়িতেই মশার আঁতুড় তৈরি করে ফেলছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের এক্তিয়ার রয়েছে পুরসভার। কর্তৃপক্ষ মনে করলে পুলিশি হস্তক্ষেপ চাইতে পারেন।’’ বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুঃখজনক ঘটনা। তবে ওই প্রৌঢ়ের কোমর্বিডিটি ছিল। বার বারই পুরসভার নির্দেশিকা মেনে চলতে বলা হচ্ছে বাসিন্দাদের। যাতে কেউ বাড়িতে মশার আঁতুড়ঘর তৈরি না করেন।’’

আবার, রিজেন্ট এস্টেট এলাকার পুরপ্রতিনিধি তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (সোশ্যাল সেক্টর) মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত রবিবার জ্বর নিয়ে ওই বৃদ্ধা বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। রক্ত পরীক্ষায় তাঁর ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল।’’ ওই এলাকাটি ১০ নম্বর বরোর অধীন। ওই বরোয় ডেঙ্গির প্রকোপ খুব বেশি বলে মানছে পুরসভা। সেখানকার ৮১ এবং ৯২ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গিতে মৃত্যুও হয়েছে। শুক্রবারের পরিসংখ্যান নিয়ে চলতি মরসুমে শুধু ১০ নম্বর বরোতেই ডেঙ্গিতে তিন জনের মৃত্যু হল। গত ২২ জুলাই থেকে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ছ’জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন বলে দাবি কলকাতা পুরসভার।

অন্য দিকে, এ দিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয়েছে খড়্গপুরের বাসিন্দা ৩৩ বছরের তরুণী রুনিতা মল্লিকের। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৪০ বছরের সাবিনা বিবির। জানা যাচ্ছে, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ডেঙ্গি আক্রান্ত প্রায় ৩৫ হাজার। আক্রান্তের বেশি হদিস মিলছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement