প্রতীকী ছবি।
সাড়ে ৩২ লক্ষ মানুষ গত ১৪ দিনে রেশন কার্ডে নাম তুলতে চেয়ে বা সংশোধন করতে চেয়ে আবেদন করেছেন বলে খাদ্য দফতর জানিয়েছে। এই শিবির আরও সাত দিন চলবে। ফলে অন্তত ৫০ লক্ষ মানুষ নতুন করে রেশন কার্ড করাতে বা সংশোধনীর আর্জি জানাতে পারেন বলে হিসেব খাদ্য ভবনের।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথায়, ‘‘কেন্দ্রের এনআরসি সংক্রান্ত ঘোষণায় মানুষ আতঙ্কিত। ভাবছেন, রেশন কার্ড করালে এনআরসি’তে নাম থেকে যাবে। তাই এত ভিড়। প্রতিটি আবেদন খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এনআরসি’র সঙ্গে রেশন কার্ড তৈরির সম্পর্ক নেই। খাদ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড নিয়ে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতেই তিন সপ্তাহ ধরে শিবির বসানো হয়েছে।’’ খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, সরকার এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ ৯৫ হাজার আবেদন যাচাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
দফতর সূত্রের খবর, সীমান্তের জেলায় ও যেখানে মুসলিম জনসংখ্যা যথেষ্ট, সেখানে রেশন কার্ডে নাম তুলতে সবচেয়ে ভিড় দেখা যাচ্ছে। উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়ায় আবেদন সবচেয়ে বেশি। হিন্দিভাষী এলাকা বলে পরিচিত ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলেও রেশন কার্ড করানোর আবেদন তুলনামূলক বেশি। তেমন আগ্রহ নেই কলকাতা ও আশপাশের এলাকায়।
খাদ্য দফতর জানাচ্ছে, রেশন কার্ড সংশোধনের প্রক্রিয়ায় নতুন পরিবারের আবেদন, পরিবারের নতুন সদস্যের নাম ঢোকানো, নাম-ধামের সংশোধনের আবেদন, ডিলার পরিবর্তন করা, এপিএল-বিপিএলের নাম সংশোধন এবং সর্বোপরি নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৩২ লক্ষ ৪৪ হাজার ৩৯৬টি। নাম অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছেন ১৬ লক্ষ। নাম সংশোধন করতে চেয়েছেন ১৪ লক্ষ ৩১ হাজার জন। আর নাম বাদ দিতে চেয়েছেন মাত্র ৪৪১৭ জন।
যদিও বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আতঙ্ক তৈরি করেছে তৃণমূল। দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই ২৪ পরগনায় এত আতঙ্ক কেন? মেদিনীপুর বা অন্যত্র তো এমন ভিড় হচ্ছে না। জনসংখ্যার চেয়ে রেশন কার্ডের সংখ্যাও এই জেলাগুলিতে বেশি।’’ দিলীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘রেশন কার্ড করাতে দালালরা সক্রিয় হয়েছে। একটি রেশন কার্ডের দাম ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এখান থেকেও তৃণমূল নেতারা কাটমানি খাচ্ছেন।’’ খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রমাণ থাকলে সামনে আনুন। রাজ্যের সম্মান নষ্ট করবেন না।’’