ঋষি। নিজস্ব চিত্র
আগুনে ঝলসানো সাড়ে তিন বছরের কৌস্তভকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখনও তার শরীরে প্রাণ ছিল। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছতেই সব শেষ।
ফাঁকা বাড়িতে আগুন লেগে পুড়ে মৃত্যু হল শিশুটির। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকাল ৮টা নাগাদ বেহালার জয়শ্রীর বামাচরণ রোডের এক বস্তি এলাকায়। এখানকার একটি বাড়িতে থাকেন মধুমিতা রায় এবং বিশ্বনাথ রায়। জানা গিয়েছে, পেশায় গাড়িচালক বিশ্বনাথবাবু প্রত্যিদিনের মতো এ দিনও ভোরবেলাতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। অভাব-অনটনের সংসারে মধুমিতা দেবীকেও সাত-আটটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে হয়। তিনিও ভোর ৫টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।
ঘরে তখন শুয়ে তাঁদের ১০ বছরের মেয়ে এবং সাড়ে তিন বছরের ছেলে কৌস্তভ। এক বাড়িতে কাজ সেরে মধুমিতা দেবী বাড়ি ফিরে দেখেন বাচ্চারা তখনও শুয়ে। তাদের জন্য রান্না করে ফের অন্যবাড়িতে রওনা দেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাগুইআটিতে রাতের অন্ধকারে স্কুল গুঁড়িয়ে দিল প্রোমোটারের বাহিনী
প্রতিবেশীরা জানান, ওই দুই শিশু প্রতি দিনের মতো বাড়িতে একাই ছিল। রোজকার মতোই রাস্তায় দিদির সঙ্গে খেলছিল কৌস্তভ। কোন ফাঁকে যে ঘরে ঢুকে গিয়েছে সে কেউ খেয়ালই করেনি। হঠাৎই তাদের বাড়ির দোতলার দরমার ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। চোখের নিমেষে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে ঘরটিতে। সঙ্গে সঙ্গে বস্তির লোকজন আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। এর মধ্যেই খোঁজ পড়ে ছোট্ট কৌস্তভের। কিন্তু তাকে বাইরে কোথাও না পেয়ে অনুমান করা হয়, সে হয়তো ওই দরমার ঘরের ভিতরেই আটকে রয়েছে। এর পরই টালি খুলে ঘরে ঢুকে কৌস্তভকে উদ্ধার করেন পাড়ারই দু’জন যুবক। তাঁদের এক জন বাবাই ঢালি বলেন, ‘‘ঘরে ঢুকে দেখি সব জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
পুড়ে ছাই ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র।—নিজস্ব চিত্র।
ঘরের এক কোণেই পড়ে রয়েছে কৌস্তভ। পুরো শরীরটা ঝলসে কালো হয়ে গিয়েছিল।’’ সঙ্গে সঙ্গে তাকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। এই ঘটনায় গোটা এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমেছে।